মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদের মদদদাতা অর্থদাতাদের অবস্থান দেশের ভিতরেই

বাদল নূর

জঙ্গিবাদের মদদদাতা অর্থদাতাদের অবস্থান দেশের ভিতরেই

শরীফ নুরুল আম্বিয়া

দেশের ভিতরই জঙ্গিবাদের মদদদাতা, অর্থদাতা ও জঙ্গিস্রষ্টাদের অবস্থান। ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনৈতিক শক্তি জামায়াত-শিবির ও তাদের সৃষ্ট হুজি (হরকাতুল জিহাদ), জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হিযবুত তাহ্রীরসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠনই জঙ্গি সৃষ্টিকারী। আর তাদের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি এ তত্পরতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদ একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া।       তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দেশের কিছু বিভ্রান্ত যুবক যোগ দিচ্ছে। তারা অর্থের মোহে নিজেদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। বাংলাদেশ যখন জাতিসংঘের আওতায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত তখন আমাদের দৃষ্টির অন্তরালে বিভ্রান্ত যুবকরা জঙ্গিবাদে লিপ্ত হচ্ছে। এজন্য যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করতে হবে দ্বিধাহীনচিত্তে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, যেসব রাজনৈতিক শক্তি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি তারাই যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্বরোচিত জঙ্গি হামলায় নেমেছে। সম্প্রতি গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট ও শোলাকিয়ায় ঈদগাহ ময়দানে এরাই জঙ্গি হামলা চালিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুনসন্ত্রাসের সঙ্গে এ জঙ্গিরাই জড়িত। বিভিন্ন মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় হামলাসহ পুরোহিত, সেবায়েত ও বিদেশিদের হত্যার ঘটনার সঙ্গে এ জঙ্গিরাই সম্পৃক্ত। তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে এই অপশক্তি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একই দিনে ও একই সময়ে দেশের ৬৪ জেলার ৫০০ স্থানে বোমা হামলা চালায় তারা। ১০-১২ বছর ধরে এই ধর্মভিত্তিক জঙ্গিবাদ সশস্ত্র কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি এখন চাপে পড়ে জঙ্গিবিরোধী বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছে। জঙ্গিবিরোধী ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করছে। জঙ্গি নির্মূলে বিএনপির সঙ্গে এক প্লাটফরমে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। তবে জঙ্গিবাদবিরোধী কর্মকাণ্ডে যেসব সংগঠন আন্তরিক তাদের সঙ্গে এক হয়ে জঙ্গিবিরোধী কর্মকাণ্ড চলতে পারে। আম্বিয়া বলেন, দেশের শান্তি, নিরাপত্তা রক্ষা ও অগ্রগতির স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাইরে জঙ্গিবাদ নির্মূলের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আরও পরিচ্ছন্ন করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় গলদ রয়েছে। জঙ্গি সৃষ্টিকারীরা বেছে নিয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকে জঙ্গি তৈরি হচ্ছে। এজন্য প্রশাসনকে আরও দক্ষ হতে হবে। জনগণের জঙ্গিবাদবিরোধী ঐক্য আরও দৃঢ়, সক্রিয় ও শক্তিশালী হতে হবে। বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে শিশু-কিশোর ও যুবকদের সচেতন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ বিশ্বে আজ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এই জঙ্গিশক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য সব গণতান্ত্রিক ও শান্তিকামী মানুষকে সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে নিজেদের স্বার্থেই। দেশের এ পরিস্থিতিতে বিদেশি শক্তি জঙ্গি মোকাবিলায় আমাদের গোয়েন্দা বিভাগের সামর্থ্য বাড়াতে হবে। যে কোনো ঘটনা ঘটার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে। লোকবল-অর্থবল ও গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে আন্তর্জাতিক সহায়তা নেওয়ার সময় এখনো আসেনি। জঙ্গিদের তথ্য উদ্ঘাটন করে ব্যবস্থা নিতে হবে নিজ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

সর্বশেষ খবর