মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

৩২ নম্বরে মানুষের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক

গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

জাতীয় শোক দিবসে গতকাল বনানী কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্প অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

গভীর শোক আর বিনম্র শ্রদ্ধায় বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করছে গোটা জাতি। তার খুনিদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর নানা স্মৃতিচারণা করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন, পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে পৃথক কমিশন গঠনের দাবি জানানোর মধ্য দিয়ে গতকাল পালিত হয়েছে জাতির জনকের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। এ উপলক্ষে দিনভর ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন ও টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিস্থলে ছিল সর্বস্তরের জনতার ঢল। সকালে রাজধানীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির শুরু হয়। এ সময় মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়াও তিন বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এর পর শেখ হাসিনা দলীয় সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া এবং প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।  শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের স্মৃতিবিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনের ভেতরে যান। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে ওই ভবনের যে সিঁড়িতে ঘাতকদের গুলিতে বঙ্গবন্ধুর প্রাণহীন দেহ পড়েছিল, সেখানে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন তিনি। ওই স্থানটিতে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করে শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করেন। সেখানে ঘুরে ঘুরে তার বাবার স্মৃতিচিহ্নগুলো দেখেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, জাতির জনকের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় আধাঘণ্টা বঙ্গবন্ধু ভবনে অবস্থান শেষে প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে গিয়ে তার পরিবারের অন্য সদস্য ও স্বজনসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে পুষ্প অর্পণ করেন। কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন তিনি। এরপর পবিত্র ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এখানেও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কবরস্থান মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে টুঙ্গিপাড়া যান। এদিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ। ভোর থেকেই জাতির জনকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে ও আশপাশের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে জড়ো হওয়া মানুষের ভিড় বঙ্গবন্ধু ভবনের আশপাশ পেরিয়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় জোরালো কণ্ঠে উচ্চারিত হয় বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিটি।

দিবসটি উপলক্ষে ছিল সরকারি ছুটির দিনও। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু ভবন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করে। সংবাদপত্রগুলো শোক দিবসের বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করে বিশেষ অনুষ্ঠান। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর অলিগলিতে মাইকে বাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণ। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান ও কবিতা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণামূলক গানও বাজানো হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। থানা, ওয়ার্ড ও মহল্লাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের উদ্যোগে দিনব্যাপী কোরআনখানি, মোনাজাত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর থানা ও ওয়ার্ড ইউনিটগুলো। সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।  

টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা : জাতীয় শোক দিবসে গতকাল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণের জন্য নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ১৫ আগস্টে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। পরে বেলা ১১টায় মাজার কমপ্লেক্স মসজিদে জাতির জনকের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবর্গ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, পুলিশের আইজি, র‍্যাবের মহাপরিচালক, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সারা দিন সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে বঙ্গবন্ধুর মাজার প্রাঙ্গণে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ উপলক্ষে সেখানে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টার দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে সরাসরি টুঙ্গিপাড়ায় আসেন। অনুষ্ঠান শেষে দুপুর সোয়া ১২টায় তিনি ঢাকায় ফিরে যান। জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হেলাল উদ্দিন, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।

ধানমন্ডিতে জনতার ঢল : ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভবন থেকে নিউমাকের্ট টু আসাদগেট রাস্তায় ও চারপাশে হাজারো কালো রঙের ব্যানার। লাখো জনতার গায়ে পোশাকের রংও কালো। যাদের পরনে ভিন্ন রঙের বসন, তারা ধারণ করেছেন কালো ব্যাজ। হাতে ছিল কালো পতাকা ও পুষ্পস্তবক। শোকের প্রতীক এ কালো রং ধারণ তার জন্য যিনি বাংলাদেশকে দেখিয়েছিলেন আলোর পথ। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে জাতিকে স্বাধীনতা এনে দেওয়া সে মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকীতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে নেমেছে শোকার্ত জনতার ঢল। গভীর শ্রদ্ধা আর সিক্ত নয়নে কৃতজ্ঞ জাতি নতমস্তকে স্মরণ করেছে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে মানুষের এই মিলনমেলায় পা ফেলার জায়গা ছিল না। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর কিংবা বৃদ্ধ সবাই এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে। ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পথ ধরে মুজিব স্মরণে হাজারো শোকার্ত মানুষ তাদের যাত্রা শুরু করেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের দিকে, বঙ্গবন্ধু ভবনে। ৪১ বছর আগে যেখানে থাকতেন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ মানুষটি নেই, সেখানে আছে তার প্রতিকৃতি। সেই প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে যদি জনক হারানোর শোক খানিকটা লাঘব হয়—এই অনুভূতি থেকে। এবার শ্রদ্ধা জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের স্রোত অতীতের সব রেকর্ড ম্লান করে দেয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির শুরু হয়। এ সময় মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়াও তিন বাহিনীর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এর পর শেখ হাসিনা দলীয় সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবন ত্যাগ করার পর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং সাম্যবাদী দলের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি, ছাত্রলীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বঙ্গভবনে মিলাদ : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল বঙ্গভবনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জোহরের নামাজের পর দরবার হলে অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ যোগ দেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মিলাদ মাহফিলে রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য এবং বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন বঙ্গভবন মসজিদের ইমাম মাওলানা মাসুদুর রহমান।

দোয়া ও খাবার বিতরণ : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা দুপুরে গুলিস্তানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। এতে অংশ নেন সংগঠনের সভাপতি মাহমুদ পারভেজ জুয়েল, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় কমিটির শফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, শরিফ উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক, সিদ্দিক আহমেদ, বশির চৌধুরী, রবিউল ইসলাম প্রমুখ। বিজিবি সদর দফতরসহ রিজিয়ন, সেক্টর প্রতিষ্ঠানসমূহে কোরআন খতম এবং দোয়া মাহফিল করা হয়েছে। ঢাকা-৫ আসনের এমপি আলহাজ হাবিবুর রহমান মোল্লা তার নির্বাচনী এলাকায় শতাধিক স্থানে কাঙালি ভোজের আয়োজন করেন। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান মোল্লা সজলসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা-৪ আসনের এমপি ও জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নেতৃত্বে নির্বাচনী এলাকায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা এবং দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। কদমতলী থানা আওয়ামী লীগ আয়োজন করে গণভোজের। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাবেক একান্ত সহকারী সচিব আওয়ামী লীগ নেতা ড. আওলাদ হোসেন। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ধানমন্ডির কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব এম এ আউয়াল। এ ছাড়া ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাদ জোহর দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা ও মহাসিচব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। উত্তর যাত্রাবাড়ী মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এবং ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আয়োজনে মিলাদ মাহফিল ও তবারক বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ মুন্না প্রমুখ। কাফরুলে বাইশটেকী আয়না মসজিদে দোয়া মাহফিল ও গণভোজের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে অংশ নেন শওকত হাসান মিয়া, মিরপুর জোনের ডিসি মাসুদ আহমেদ, কাউন্সিলর হাজী জামাল মোস্তফা, আবদুল আহাদ কচি, সেলিম ভুঁইয়া প্রমুখ। স্বনির্ভর বাংলাদেশ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য ডা. মো. ইউসুফ আলী, ফরিদা-ই চৌধুরী, সংগঠনের অফিসার ফখরুল ইসলাম, অন্তত কুমার চৌধুরী প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর