বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুলশান হামলায় আরও আটজন চিহ্নিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় জড়িত আরও অন্তত আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের সাংগঠনিক নাম জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্যের পাশাপাশি গুলশান হামলার মামলার তদন্ত ও সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে কথা বলেন। মনিরুল বলেন, গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মারজান। এরা দুজনই নব্য জেএমবির অন্যতম অপারেশনাল কমান্ডার। এ ছাড়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক কমান্ডার বরখাস্তকৃত মেজর জিয়াউল হকও বর্তমানে জঙ্গিদের সংগঠিত করছেন। তামিম, জিয়া ও মারজান ঢাকায় আছেন তবুও কেন গ্রেফতার হচ্ছেন না— এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, ‘কল্যাণপুরের ঘটনার সময় এরা ঢাকাতেই ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। তাই এখনো তারা ঢাকায় থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে মারজানকে কখনো কখনো চট্টগ্রামেও দেখা গেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাদের আমরা এখনো গ্রেফতার করতে পারিনি।’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য কেউ তাদের আটক বা গ্রেফতার করেছে কিনা তা তার জানা নেই। বিশেষ করে মারজানের ব্যাপারে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, মারজানের ছবি প্রকাশের পর বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া গেছে। তবে তাকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সবার সহযোগিতায় আশা করা হচ্ছে মারজান ধরা পড়বেন। তাকে আটক করার জন্য তার বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এমনকি তার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহপাঠীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাকে আটক করা হয়েছে কিনা তা তিনি বলেননি। তবে মারজানের বাবাকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করেনি বলে দাবি করেন তিনি। সিটিপ্রধান আরও বলেন, নতুন করে যাদের নাম সন্দেহের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, তাদের সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেছে। তারা বিভিন্ন ঘটনায় ভূমিকা পালন করেছেন। তবে তাদের অবস্থান এখনো জানা যায়নি। এ নিয়ে কাজ চলছে। অনেকের সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেলেও তারা ইতিপূর্বে অনেক হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে সেই নাম আগের ছবির সঙ্গে মিলবে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে জঙ্গিদের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার প্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের তরফ থেকে গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মারজানের ছবি প্রকাশ করে প্রাথমিক সাফল্য পাওয়া গেছে। কিছুদিন আগে তাকে চট্টগ্রাম এলাকায় দেখা গিয়েছিল বলে পুলিশের ‘হ্যালো সিটি’ অ্যাপে মানুষ তথ্য দিয়েছে। গুলশান হামলার ঘটনায় যেসব জঙ্গি এখন পর্যন্ত মারা গেছে, তাদের সঙ্গে তামিমসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যোগাযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনাস্থল থেকে আলামত জব্দ করে সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। আলামতগুলো এখনো পরীক্ষাগারে আছে। সিআইডির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে এ ঘটনায় কার কী যোগাযোগ ছিল সে সম্পর্কে জানা যাবে। নব্য জেএমবিকে কারা পৃষ্ঠপোষকতা করছে— এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, আগের মতো কোনো শক্তিশালী মহল থেকে তারা পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে না।

১৭ আগস্ট দেশব্যাপী জেএমবির বোমা হামলার প্রসঙ্গে বলেন, জেএমবি দেশব্যাপী বোমা হামলা চালিয়ে তাদের শক্তির জানান দিয়েছিল। পরে অনেকের বিচার হয়েছে, জেলে রয়েছেন শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা।

সর্বশেষ খবর