বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
তুর্কি রাষ্ট্রদূত ওজতুর্ক

বাংলাদেশ-তুরস্কের বৈরিতা নেই, আছে কিছু ভুল বোঝাবুঝি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ-তুরস্কের বৈরিতা নেই, আছে কিছু ভুল বোঝাবুঝি

বাংলাদেশ ও তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে কোনো বৈরিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত দেবরিম ওজতুর্ক। তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড নিয়ে তুরস্কের যে অবস্থান সে বিষয়ে এখানে কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে। তবে এই ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। কারণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে যে অবস্থানে বিশ্বাস করে তুরস্কও সেই একই অবস্থান গ্রহণ  করেছে। যে কোনো অপরাধেরই শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে তুরস্ক সমীচীন মনে করে না। যুদ্ধাপরাধী নিজামীর মৃত্যুর পর হঠাৎ করেই তুরস্কে চলে যাওয়া রাষ্ট্রদূত ওজতুর্ক সম্প্রতি ফিরে আসার পর গতকাল রাজধানীর এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। ১৫ জুলাই তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর সে দেশের সরকারের বর্তমান অবস্থান জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গত মে মাসে যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ফাঁসি হলে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছিলেন। পরে ট্রাইব্যুনালের বিষয়ে আলোচনার জন্য ওজতুর্ককে তুরস্কে ডেকে পাঠানো হয়। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তুরস্কের নাক গলানোর কোনো ইচ্ছা নেই। মৃত্যুদণ্ড বিলোপকারী দেশ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর নিয়ে তুরস্ক প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো চিন্তা নেই তুরস্কের। তবে তারা মনে করে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের যে সম্পর্ক এবং এ দেশে তারা যা কিছু করছেন তা ভ্রাতৃত্বসুলভ পরামশের্র অংশ হিসেবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈরিতা নেই। সব বৈধ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আছে। রাষ্ট্রদূত জানান, তুরস্কে গত মাসের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের মদদদাতা ফেতুল্লাহ গুলেনের বিশ্বের ১৬০টি দেশে সমর্থক রয়েছে। বাংলাদেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কিছু প্রতিষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি আছে। এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে। বিশেষত বাংলাদেশে পরিচালিত টার্কিশ হোপ স্কুলের পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আনার জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে তুরস্ক। তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে তুরস্কের প্রায় ৩০০ কূটনীতিকের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ঢাকায় তুর্কি দূতাবাসে কর্মরত তিনজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে এক কূটনীতিক দম্পতি তুরস্ক গিয়ে পরে অন্য দেশে চলে গেছেন। অন্য কূটনীতিক আঙ্কারায় ফিরেছেন।

সর্বশেষ খবর