বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশ দেশের রাজা নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশ দেশের রাজা নয়

ড. কামাল হোসেন

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘মানুষ বলে পুলিশ দেশের রাজা। বঙ্গবন্ধু তা বলেননি। এটা কে বলেছে জানি না। পুলিশ দেশের রাজা নয়। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, দেশের মালিক দেশের রাজা- দেশের জনগণ।’

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গতকাল ‘গরিবের জন্য বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ড. কামাল আরও বলেন, ‘দেশের রাজা কোনো ব্যক্তি নয়, কোনো পরিবার নয়। বঙ্গবন্ধু দলিল করে এ কথা লিখে দিয়ে গেছেন- দেশের  রাজা জনগণ। দেশের সংবিধানে তা লিপিবদ্ধ আছে। কেউ জোর করে রাজা হতে চাইলে, সংবিধান ও আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করতে চাইলে, তাদের রাজত্ব আমরা ঘুচিয়ে দেব।’ রাজধানীর বস্তিবাসীদের সংগঠন ‘আমরাও নাগরিক’ এ সভার আয়োজন করে। কুড়িল ও কল্যাণপুর বস্তির শত শত মেহনতি মানুষ এ আলোচনা সভায় যোগ দেন। সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, সাবেক এমপি মফিজুল ইসলাম খান কামাল, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা বারের সাবেক সহসভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান সাইদ। ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণ কোনো ব্যাপারে অসহায় নয়। বস্তিবাসী কোনো দিন অসহায় ছিল না। বাঙালি কোনো দিন অসহায় নয়। বঙ্গবন্ধু সংবিধানে জনগণের যে মৌলিক অধিকার দিয়ে গেছেন, তা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। আমরা সে অধিকার রক্ষা করব। সভায় জি এম কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করেছেন। শুধু দেশ স্বাধীন করেননি, জনগণের মালিকানাসহ রাষ্ট্র দিয়েছেন। সেই রাষ্ট্রে সরকারি জমিতে কোনো নিঃস্ব মানুষ যদি আশ্রয় নেয়, তাকে বেআইনি বলা যায় না। আমরা দেখছি আইনের দোহাই দিয়ে অবিচারও হয়। হাজার হাজার সরকারি জমি বিত্তবানরা দখল করে নিচ্ছে, লুটপাট করছে। আইন তাদের কিছু বলছে না। দেশে সংবিধান যদি পুনরুজ্জীবিত করতে হয় জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, এই সরকার শুধু বঙ্গবন্ধুর অনুসারী নয়, যারা বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে ভারত-সিআইএ’র দালাল বলেছে-এ সরকারে তারাও আছে। ফলে তাদের কাছ থেকে কী পাওয়া যাবে তা নিয়ে আমার সংশয় আছে। তিনি বলেন, আজকের শপথ হোক, যেখানেই অত্যাচার-অবিচার, সেখানেই হোক আমাদের কণ্ঠ সোচ্চার। জগলুল আফ্রিক বলেন, এ দেশ কোনো রাজার নয়। ব্যাংক থেকে যারা কোটি টাকা লুট করে নেয়-তাদেরও নয়। দখলের জন্য একজন এমপি কল্যাণপুর বস্তিতে আগুন লাগিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন। সুব্রত চৌধুরী বলেন, দেশ সংবিধান অনুযায়ী চলছে না। আইনের সঠিক শাসন চলছে না। বড়লোকের জন্য এক আইন গরিবের জন্য এক আইন। এটা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী। প্রতিমুহূর্তে অন্যায় করছেন, অবিচার করছেন, এটা মেনে নেব না। আপনারা ছাত্রসমাজকে ধ্বংস করে বড়লোকের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে জঙ্গি তৈরির কারখানা বানিয়েছেন। গণতন্ত্রকে হত্যা করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর