শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

সোশ্যাল মিডিয়াতে তোলপাড়, ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়াউর রহমানকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ দাবি করে আওয়ামী লীগের এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষত ফেসবুকে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ক্ষোভ ঝেড়েছেন দেশে-বিদেশে বসবাস করা বাংলাদেশিরা। আওয়ামী লীগের এই এমপিকে কেউ কেউ ‘আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী এজেন্ট’, ‘লুকায়িত জিয়ার সৈনিক’, ‘আওয়ামী দুধ-কলায় পালিত জিয়ার সৈনিক’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন। প্রবাসী ফজলুল বারী লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী এজেন্ট সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলার চেষ্টা করেছে জিয়াউর রহমান নাকি দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি! নুরুল মজিদ হুমায়ুন এমপি তাকে মুখের ওপর ধরে গিয়ে বলেন, আপনি তো এখানে আসলে খালেদা জিয়ার এজেন্ট। বেকুব সুবিদ আলী বুঝতে পারেননি তারে এভাবে হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেওয়া হবে।’ ব্যবসায়ী মাহবুব রাজিব তার স্ট্যাটাসে বলেছেন, ‘কুমিল্লাবাসীর দুর্ভাগ্য বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনি খন্দকার মোশতাক, রশীদ গং এর কলঙ্ক তিলক মুছে না যেতেই সুবিদ আলী ভূঁইয়া নামের আরেক মুনাফেক, বিশ্বাসঘাতকের রূপ উন্মোচিত হয়েছে। কাকতালীয়ভাবে মোশতাক এবং সুবিদ আলী ভূঁইয়া দুজনই দাউদকান্দির।’ তিনি লিখেছেন, ‘সুবিদ আলী ভূঁইয়া নামের সেনা কর্মকর্তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল তার এলাকার লোকজন চাকরিতে থাকার সময়ই জানতেন। ওই সময়ে জেনারেল ভূঁইয়া আওয়ামী লীগবিরোধী এবং প্রো-বিএনপি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন সুবিদ আলী ভূঁইয়া তার সামরিক সচিব ছিলেন। একজন মানুষ কতটা বিশ্বস্ত হলে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হতে পারেন তা আলাদাভাবে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। সুবিদ আলী ভূঁইয়ার প্ল্যান ছিল চাকরি থেকে অবসরের পর বিএনপি  থেকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মতো ডাকসাইটে নেতাকে ডিঙিয়ে বিএনপির মনোনয়ন পাবেন না, বুঝতে পেরে ২০০৮ সালে নৌকায় চড়ে নৌকার মাঝি হয়ে গেলেন।’ রাজিব লিখেছেন, ‘সুবিদ আলী ভূঁইয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একমাত্র অফিসার যিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও কোনো খেতাব পান নাই। সুবিদ আলী ভূঁইয়ার ভুল রণকৌশলের কারণে যুদ্ধ ময়দানে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিম বীরবিক্রম গুরুতর আহত হন। দ্বিতীয়বার অগ্রগামী পার্টি সুবিদ আলীর ভুল ইনফরমেশনের কারণে সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ  মোশাররফ বীরউত্তম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অ্যামবুশের মধ্যে পড়েন।’ শিক্ষক আরিফা রহমান রুমা লিখেছেন, ‘এসব সুযোগ সন্ধানী নষ্ট মানুষেরাও আজ আওয়ামী লীগার বলেই দল শারীরিকভাবে পরিপুষ্ট মনে হলেও ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে যেতে শুরু করেছে। কী দারুণ রাজনীতি! একদা যিনি বিএনপির অফিসে বসতেন আজ তিনি আওয়ামী লীগের এমপি। খেলোয়াড়দের ক্লাব বদলের মতো। যে আদর্শের মুলো দেখে আমাদের মতো হাজারো তরুণ বেড়ে উঠেছে, মিছিলে মিছিলে তাদের দীর্ঘশ্বাসের জবাব নেতাদের একদিন নিশ্চয়ই দিতে হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা লিখেছেন, ‘সুবিদ আলী ভূঁইয়া, যার রক্ত বিএনপি। যার জন্মই জিয়ার ঘরে, তাকে আওয়ামী লীগ সংসদের টিকিট দিয়েছে! ফলাফল : জিয়া দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি।’ সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম খোকন লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগে এখন সুবিধা আলীর সংখ্যাই বেশি।’  জনৈক ফুয়াদ আদনান বিন জামাল লিখেছেন, নৌকা ভাড়া দেওয়ার  কোনো মানেই আসে না। খন্দকার মোশতাকের উকিল জামাই সুবিদ আলীর কোনো দোষ নেই। দোষ টিকিটের, দোষ নীতিনির্ধারকের। কুমিল্লার দুর্ভাগ্য এমন অজাতরা এ মাটিতে জন্ম নিয়েছিল। তবে কুমিল্লা কেন সারা বাংলায় এখন এদের বংশবিস্তার।’

সর্বশেষ খবর