শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
কলেজছাত্রী আফসানা হত্যা

ছাত্রলীগ নেতা রবিনকে খুঁজছে পুলিশ

মাহবুব মমতাজী

ছাত্রলীগ নেতা রবিনকে খুঁজছে পুলিশ

মিরপুরে সাইক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের স্থাপত্য বিদ্যার শেষ বর্ষের ছাত্রী আফসানা  ফেরদৌস হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিনকে খুঁজছে পুলিশ। মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন রবিনকে গ্রেফতার করা গেলে এই হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে। এদিকে আফসানা ফেরদৌসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ সূত্র জানায়, ময়নাতদন্তে যেসব আলামত পাওয়া গেছে তাতে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ আফসানার সঙ্গে কারও প্রায় তিন মাস ধরে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মো. শফিউজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এটা আত্মহত্যা না হত্যা তা জানি না। তবে শ্বাসরোধের কারণে মৃত্যু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুলিশের মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) কাজী মাহবুবুল আলম জানান, এ ঘটনায় তাদের ওপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনেক চাপ আছে। পুলিশ এখনো কোনো ক্লু খুঁজে পায়নি। আল-হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতালের সিসি টিভি ফুটেজ জব্দ করে তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ফুটেজের সূত্র ধরে অচিরেই লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়া দুই যুবককে শনাক্ত করা সম্ভব। আর যে অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে আফসানার স্বজনদের কাছে যোগাযোগ করা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসি আরও বলেন, আফসানাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে একটা অভিযোগ এসেছে। আর এ অভিযোগের তীর যেহেতু রবিনের দিকে তাই পুলিশ রবিনকে খুঁজছে। আফসানার ভাই ফজলে রাব্বী বলেন, তিনি নিজেও ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। এক ছাত্রলীগ কর্মীর বোনকে আরেক ছাত্রলীগ কর্মী এভাবে মেরে ফেলতে পারে তা তিনি ভাবতেই পারছেন না। রবিনের দিকে কেন আপনাদের অভিযোগের তীর জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আফসানা ও রবিনের বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে জানতে পারি তাদের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অর্থাৎ যাকে বলা হয় প্রেম। কারও প্রেমিকা বা স্ত্রী মারা গেলে স্বাভাবিকভাবে তাকে সেই লাশের পাশে পাওয়া যায়। কিন্তু আমার বোন মারা যাওয়ার পর থেকে রবিনের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। আর এই মৃত্যুর খবরগুলো প্রথমে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন নম্বর থেকে রবিনের বন্ধুদের মাধ্যমে। তার বন্ধু টিপু প্রস্তাব দিয়েছে ‘ঘটনা যাই হোক আসেন আমরা বসে বিষয়টা মীমাংসা করে ফেলি।’

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে অপরিচিত মোবাইল ফোন থেকে জানানো হয়, আফসানার লাশ কাফরুলের আল-হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে পড়ে আছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন লাশটি কাফরুল থানায়। এরপর কাফরুল থানায় আফসানার ছবি দেখানো হলে থানায় ডিউটিরত পুলিশরা জানায়, এই লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। সেদিন রাত ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আফসানার লাশ শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। সূত্র জানায়, গত শনিবার বিকালে দুই যুবক সিএনজিতে করে আল-হেলাল হাসপাতালে এক তরুণীকে নিয়ে আসে। সেখানে তারা জরুরি বিভাগের স্ট্রেচারে তাকে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় মেয়েটির গলার নিচের দিকে গভীর দাগ দেখা যায়। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাফরুল থানায় খবর দেয়। পরে থানার এসআই ফজলুল হক লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠান।

সর্বশেষ খবর