শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
দিল্লির চিঠি

দিল্লিতে ইনু যা বললেন

ঋতুপর্ণা রায়, নয়াদিল্লি

দিল্লিতে ইনু যা বললেন

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছেন, ভারতীয় তথ্যমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে তার আলোচনায় স্থির হয়েছে শিগগিরই দুদেশের মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদান বাড়ানোর জন্য একটি সমঝোতাপত্র সই হবে। ভারত এবং বাংলাদেশের সরকারি প্রচারমাধ্যম দূরদর্শন ও আকাশবাণীর সঙ্গে বাংলাদেশের টিভি ও রেডিওর মধ্যে সহযোগিতার ব্যবস্থা হচ্ছে। তিনি বলেন, এর ফলে মগজধোলাই করার জন্য প্রচারিত মৌলবাদী ও জঙ্গি মতাদর্শের মোকাবিলা করা সহজ হবে দুদেশেই। সন্ত্রাসবাদ কোনো আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়। রাজনৈতিক সমস্যা।

জানা গেছে, আগামী ২৩ আগস্ট আকাশবাণী মেত্রী পরিসেবা চালু হবে কলকাতার রাজভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির উপস্থিতিতে। পাশাপাশি সিনেমার যৌথ প্রযোজনা, যৌথ উদ্যোগে তথ্যচিত্র তৈরি (ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের ইতিহাস যাতে বিধৃত থাকবে) করার মতো বিষয় নিয়েও ইনুর চলতি সফরে কথা হয়েছে ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে।

নয়াদিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, দীর্ঘদিন পর দুদেশের তথ্যমন্ত্রীর মধ্যে আলাদা করে বৈঠক হলো। এ বৈঠক যে মূলত সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রচার কৌশল তৈরি করার জন্যই, তা গতকাল ইনুর কথাবার্তায় স্পষ্ট হলো।

হাসানুল হক ইনু ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে গতকাল ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানের ‘ট্র্যাক রেকর্ড’ বরাবরই খুব খারাপ। ’৭১-র মুক্তিযুদ্ধের পঁয়তাল্লিশ বছর কেটে গেছে কিন্তু তাদের আচরণে কোনো বদল হয়নি। সে দেশের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার জন্য বাংলাদেশ বাধ্য হয়েছে ঢাকার পাক দূতাবাসের কয়েকজন কূটনীতিককে ফেরত পাঠাতে। পাকিস্তান প্রচারিত সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শের মোকাবিলা করার বিষয়ে তিনি বৈঠক করেছেন ভারতীয় তথ্যমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে।

ভারত-পাকিস্তান চলতি দ্বিপক্ষীয় বাগযুদ্ধের জেরে ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে নভেম্বরের সার্ক বৈঠক। আর ঠিক সেই সময়ে সার্কেরই অন্যতম সদস্য দেশটির পক্ষ থেকে সন্ত্রাস প্রশ্নে ইসলামাবাদের কড়া সমালোচনা করা, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল বলেই মনে করা হচ্ছে। সন্ত্রাস প্রশ্নে গতকাল ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে সে দেশের তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবসে যা বলেছেন তা ঠিকই। পাকিস্তান সর্বত্র মৌলবাদ ও জঙ্গি নাশকতাকে সহায়তা করে চলেছে।

ঢাকায় গুলশান ঘটনার পর নয়াদিল্লি এসেছিলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এবার তথ্যমন্ত্রী তার তিন দিনের সফরে এসে ইসলামের নামে সন্ত্রাসের প্রচার বন্ধ করার জন্য ভারতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার কথাই বলে গেলেন। সেই সঙ্গে আক্রমণ করলেন পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকেও। ইনুর কথায়, পাকিস্তানের ট্র্যাক রেকর্ড অত্যন্ত খারাপ। যদি গণতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার মধ্যে থাকতে হয় তাহলে জবাবদিহি করতে হবে তাদের। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগসাজশ রেখে চলছিল বলে কিছু পাকিস্তানি কূটনীতিককে ফেরত পাঠাতে হয়েছিল আমাদের।

গুলশান ঘটনার পর আইএসআই-এর বিরুদ্ধে তর্জনী তুলেছিল ঢাকা। গতকাল শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য ইনু বললেন, জামায়াত পাকিস্তানের মৌলবাদী জঙ্গি শক্তির সঙ্গে একাট্টা হয়ে নাশকতা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদের শিকড় লুকিয়ে রয়েছে পাকিস্তানের আইএসআই-জামায়াত নেটওয়ার্কের ভিতর। তবে আইএসআই-এর সঙ্গে গুলশান ঘটনার যোগাযোগ রয়েছে কিনা সেই প্রমাণ এখনো স্পষ্ট হয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর