মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না

হোসেন জিল্লুর রহমান

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, উন্নয়নচিন্তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা—এসডিজি। উন্নয়ন হবে, কিন্তু কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না। শুরুতে বাংলাদেশে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। এখন দারিদ্র্য অনেক কমে এসেছে। বাংলাদেশ এখন দারিদ্র্য দূরীকরণের তৃতীয় স্তরে। এই স্তরে অনেকে দারিদ্র্য ফাঁদে আটকে থাকে। এখানে প্রান্তিকতা ও বিচ্ছিন্নতা বড় সমস্যা। প্রান্তিকতা ও বিচ্ছিন্নতায় তিন ধরনের বোঝা তৈরি হয়। সেগুলো হলো উচ্ছেদের ভয়, চরম দারিদ্র্য ও পরিসংখ্যানগত অনুপস্থিতি। এদের অধিকার আদায় করতে হলে প্রথমে তাদের দৃশ্যমান করতে হবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিআরডি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয় : বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নতা ও প্রান্তিকতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার—পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। পিপিআরসি, সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট—সেড, ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ—সিসিডিবি ও গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র—জিবিকের যৌথ আয়োজনের এ কর্মশলায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপ—ইআরজির চেয়ারম্যান প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সেড সভাপতি সাখাওয়াত আলী খানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন মানবাধিকার আন্দোলনের সংগঠক ড. হামিদা হোসেন, লেখক হরিশংকর জলদাস, সেডের পরিচালক ফিলিপ গাইন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো—বিবিএসের সহকারী পরিচালক দিপঙ্কর রায়, চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভোজন কৈরী প্রমুখ। ড. গওহর রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, দেশের আইনের মধ্যে অনেক বাধা ও বৈষম্য আছে। সব আইনে অনেকের ‘স্পেশাল নিড’ উঠে আসেনি। তিনি বিচ্ছিন্ন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে একটি স্থায়ী ফোরাম গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে প্রচুর পরিমাণে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী (সোশ্যাল সেফটি নেট) আছে। সারা দেশে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছে। যোগাযোগ ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ড. হামিদা হোসেন বলেন, সংবিধানে সবার সমান অধিকার ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে অনেক জনগোষ্ঠী বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে এবং অনেক পিছিয়ে আছে। লেখক হরিশংকর জলদাস প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, প্রান্তিকতা বা বিচ্ছিন্নতার জন্য কারা দায়ী? যারা এসব জনগোষ্ঠীকে প্রান্তিকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে তারা, নাকি যারা ঠেলা খেয়েছে তারা? তিনি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলোর উদ্দেশে বলেন, বেদনা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ শিক্ষা। ফিলিপ গাইন বলেন, তারা ৩৭টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পেয়েছেন, যারা কোনো সরকারি তালিকায় নেই। এ কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানচিত্র ও সঠিক চিত্র তৈরি করা।

সর্বশেষ খবর