বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

পদ হারানোর ভয় আওয়ামী লীগে

বাদল নূর

আসন্ন কাউন্সিলে পদ হারানোর ভয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। তোপের মুখে রয়েছেন দীর্ঘদিন শীর্ষ পদ ধরে রাখা নেতারা। বাদ পড়ার তালিকায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সদস্যদের নাম রয়েছে। তাদের  শূন্য পদে ঠাঁই পাবেন মাঠের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পরিচিত পদবঞ্চিত ত্যাগী, যোগ্য ও দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ নেতারা। এ ছাড়া এবার দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ঠাঁই পাবেন সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা। দলকে আরও গতিশীল ও সুসংগঠিত এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করতে দলীয় প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তিন দফা পিছিয়ে দলের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর। জানা গেছে, দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা একজনকে দীর্ঘদিন এক পদে না রেখে যোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদে এনে দলকে শক্তিশালী করার পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তবে দলীয় প্রধানকে এ নীতি গ্রহণ না করতে কেউ কেউ নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দলীয় পদ টিকিয়ে রাখতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলে বাদ পড়তে পারেন বলে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, নুহ-উল আলম লেনিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। বাদ পড়তে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সদস্যও। এসব পদে ঠাঁই পেতে পারেন দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকা বেশ কজন ত্যাগী, সংগ্রামী ও দলবান্ধব নেতা। জানা গেছে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল বোস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবের হোসেন চৌধুরী, দফতর সম্পাদক আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, সাবেক ছাত্র নেতা শাহে আলম, মাঈনুদ্দীন হাসান চৌধুরী, বাহাদুর বেপারী, ইসহাক আলী খান পান্না, লিয়াকত সিকদার, অজয়কর খোকনের এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই হতে পারে। তবে নানামুখী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে জোরদার লবিং-তদবিরের কারণে সব ক্ষেত্রে এই নীতি গ্রহণ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,  মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পরিচিত ত্যাগী, সংগ্রামী ও দলবান্ধব নেতাদের এবার সম্মেলনে মূল্যায়ন করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ নবীন-প্রবীণরা দলে ঠাঁই পাবেন। ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই দলের কাউন্সিলে এক সময়ের রাজপথ কাঁপানো বেশ কিছু নেতাকে বাদ দেওয়া হয় দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে। বাদ দেওয়া হয় দলের সাবেক ছাত্রনেতাদের। একই সঙ্গে দলের প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ দিয়ে উপদেষ্টা করা হয় কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে। এ সম্পর্কে একজন সিনিয়র নেতা বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীরাই আওয়ামী লীগের প্রাণ। তারাই দলকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু দলে তৃণমূল নেতা-কর্মীরাই সব সময় অবহেলিত, উপেক্ষিত। দলে বা সরকারে তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর