নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার কারাবন্দীর দেড় বছর পূর্তি আজ। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বিচার ছাড়াই জেলের ঘানি টানছেন তিনি। কারাগারে অসুখে-বিসুখেই কাটছে ডাকসুর এই সাবেক ভিপির। এখনো তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ গঠন হয়নি। মাহমুদুর রহমান মান্নার সহধর্মিণী মেহের নিগার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বিনা বিচারে আমার স্বামী দেড় বছর ধরে কারাগারে। এটাই কি আইনের শাসনের নমুনা? কারাগারে নানা অসুখে আক্রান্ত মান্না। তার হার্টে প্রচণ্ড সমস্যা। ভালো চিকিৎসা দরকার। তার সুচিকিৎসার জন্য অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।’ পরিবার ও দলীয় নেতারা জানান, গেল বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বনানীর এক আত্মীয়ের বাসা থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক করে। ১৮ ঘণ্টা নিখোঁজের পর তাকে পরদিন গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই দিনই তার বিরুদ্ধে দুটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। দুই মামলায় তাকে ২০ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের ১৩ দিন পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এরপর অবশ্য তার রিমান্ড বাতিল হয়। আগামী ৩০ আগস্ট জামিন বিষয়ক আদেশের দিন ধার্য রয়েছে বলে মান্নার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। জানা যায়, হাঁটু ও মেরুদণ্ডের ব্যথা, হার্টে ব্লক, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে জর্জরিত মান্না। ডিভিশন দেওয়া হয়নি ডাকসু ও চাকসুর সাবেক এই ভিপিকে। কারাগারে তার জায়গা হয়েছে মেঝেতে। রিমান্ডে নেওয়ার পর একাধিকবার অসুস্থ হয়ে পড়েন মান্না। তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় চোখে স্প্লিন্টার লাগায় তাকে ল্যান্স ব্যবহার করতে হয়। মান্নার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইদ্রিসুর রহমান বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না কারাগারে বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো পুলিশ রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। বিচার ছাড়াই আটক রাখা হয়েছে তাকে। আমরা তার জামিনে মুক্তি দাবি করছি। নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্নার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এরপরও আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আন্দোলনের মাধ্যমে মান্নাকে মুক্তি করে আনব।’