বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

শীতলক্ষ্যা দখলের প্রমাণ পেল বিআইডব্লিউটিএ

পরিদর্শন করলেন কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রতিদিনে গতকাল প্রকাশিত ‘শীতলক্ষ্যায় দখলের উৎসব’ শীর্ষক প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দখলবাজদের বিরুদ্ধে তত্পর হয়ে উঠেছে প্রশাসন, চলছে বিআইডব্লিউটিএর ছোটাছুটি। গতকালই ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের কর্মকর্তারা। তারা দিনভর রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন, সহকারী পরিচালক রেজাউল করিমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রূপসী, পূর্বগ্রাম, চরপাড়ার প্রতিটি পিলার এলাকা ঘুরেফিরে দেখেন। পর্যবেক্ষণকালে তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা সাতটি ড্রেজারের মাধ্যমে নদীসীমায় বালু ফেলে দেদার জায়গা জবরদখলের ধুম তত্পরতা দেখতে পান। তদন্তকারীরা পূর্বগ্রাম ও চরপাড়ায় গিয়ে দেখেন নদীতীরের শতাধিক একর জমি ভরাট করতে সিটি গ্রুপের পক্ষে অর্ধশত শ্রমিক কাজ করছেন। শ্রমিকরা নদীর সীমানা পিলার হটিয়ে ২০০ ফুট পর্যন্ত নদী-অভ্যন্তরে ঢুকিয়ে প্রতিস্থাপন করছেন। এরপর নদীর বুকেই ড্রেজারের সাহায্যে ধুমছে বালু ফেলে ভরাটের কাজ চলছে। কায়েতপাড়ায় সিটি গ্রুপের লোকজন ইতিমধ্যেই অর্ধশতাধিক পিলার মাটি ভরাটের মাধ্যমে ঢেকে ফেলেছেন। শীতলক্ষ্যা পাড়ের ১২১৬ থেকে ১৩৪৬ নম্বর পর্যন্ত পিলার নানা কৌশলে অস্তিত্বহীন করে নদীর শত শত একর জায়গা জবরদখলের চিত্র দেখে তদন্তকারীরা রীতিমতো অবাক। শিল্প গ্রুপগুলো তাদের কল-কারখানা স্থাপনের জন্য নদী-খালের পাশাপাশি অনেক কৃষিজমিও দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেসব জমিতে সন্ত্রাসীদের পাহারায় রাত-দিন মাটি ফেলে ভরাটের কাজ চলছে। সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় নদী ভরাট করে অবৈধভাবেই নির্মাণ করা হয়েছে জেটিঘাট। নদীতীরের প্রায় ৩০ ফুট প্রশস্ত এলাকা ভরাটের মাধ্যমে প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাইভেট সড়ক তৈরি হচ্ছে দেখে তদন্ত কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হন। ওই এলাকায় নদীর উভয় পাড়ে মাটি, বালু ও সুরকি ফেলে প্রতিনিয়ত ভরাট-দখলের কাজ চলছেই। তা ছাড়া প্রতিটি শিল্প কারখানার তরল বর্জ্য দীর্ঘ পাইপের মাধ্যমে সরাসরি শীতলক্ষ্যায় নিক্ষেপ করার ঘটনাও তারা দেখতে পান। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, বর্জ্য নিক্ষেপের অভিযোগে ইতিপূর্বে পরিবেশ অধিদফতর কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েও এ অপকর্ম থামাতে পারেনি। কল-কারখানার বিষময় বর্জ্য নদীর পানিতে মিশে যাওয়ায় পানির রং কোথাও লালচে আবার কোথাও কুচকুচে কালো হয়ে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর