শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে

বাদল নূর

মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে

মোজাফফর হোসেন পল্টু

আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেছেন, জঙ্গিবাদ সারা বিশ্বে আজ মানবসভ্যতার ওপর আক্রমণ করছে। ধর্মকে পুঁজি করে, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদ বিভিন্ন দেশে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। এটি প্রকৃত মুসলমানের কাজ হতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। মানুষ হত্যার মতো নিষ্ঠুরতা ইসলাম সমর্থন করে না। পল্টু আরও বলেন, বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে এই নিষ্ঠুরতাকে মদদ দিচ্ছে। আফগানিস্তানকে সোভিয়েত আধিপত্যমুক্ত করার জন্য পাশ্চাত্য শক্তি তালেবান সৃষ্টি করে। পরে এ তালেবানরাই ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হিসেবে আবির্ভূত হয়। তারা সারা বিশ্বে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় তুরস্কে বিয়ের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। সারা বিশ্বে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। আর ঘটনা ঘটার পর আইএস এ ঘটনার দায় স্বীকার করছে। বাংলাদেশের জঙ্গিরাও ঘটনা ঘটানোর পর নিজেদের আইএস বলে পরিচয় দিয়েছিল। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মোজাফফর হোসেন পল্টু আরও বলেন, ২০১৩-১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার জন্য যে অপশক্তি দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রলবোমা ছুড়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছিল, গাড়ি জ্বালিয়েছিল, তারাই বর্তমানে জঙ্গি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গুলশান ও শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জঙ্গি হামলা এরই সাক্ষ্য বহন করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আজ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই অপশক্তি ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি। এরা ’৭৫ সালে দেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যারা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রবাসী সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন কারাগারে প্রবেশ করে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে নগ্ন জিঘাংসার পরিচয় দিয়েছিল। আজ তারা দেশে জঙ্গি হামলার মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। পল্টু বলেন, ’৭১ সালে যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারাই আজ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের মূলে কুঠারাঘাত করার লক্ষ্যে এই জঙ্গি হামলার মাধ্যমে দেশে অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলশান, শোলাকিয়া ও কল্যাণপুরে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়েছে। তারা সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ায় আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তবে আমাদের গোয়েন্দাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’ তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বা সরকারের একার পক্ষে জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব নয়। এ জন্য জুমার নামাজের খুতবায়, ওয়াজ মাহফিলে ইসলামের সঠিক নির্দেশনা তুলে ধরতে হবে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে দেশের যুবকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষের মধ্যে জঙ্গিবিরোধী চেতনা সৃষ্টি করতে হবে। আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান তথা ধর্মবর্ণনির্বিশেষ সম্মিলিতভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে যেমন বিজয় অর্জন করেছিলাম, আজ সময়ের প্রয়োজনে তেমন ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে হবে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ় পদক্ষেপ এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তার মধ্য দিয়ে যেভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করছেন তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। দলকে আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর