রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না : প্রধানমন্ত্রী

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আমি এমন কোনো কাজ আগেও করিনি, ভবিষ্যতেও করব না, যাতে দেশের এবং দেশের মানুষের সামান্যতম ক্ষতি হয়। দেশ ও জনগণের কোনো ক্ষতি হলে আমি রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করতাম না। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় সরকার সবদিক থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে জার্মানির একটি ফার্মকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিবেশের প্রশ্নে আমরা কোনো আপস করব না। সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে গতকাল বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আশ্বাস দেন। তিনি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, খালেদা জিয়া অসত্য, বানোয়াট ও  উদ্ভট তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের সমালোচনা করে বলেন, আন্দোলন করতে গেলে ফুয়েল (অর্থকড়ি) দরকার, তারা ফুয়েল পায় কোথায়? রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচনার পাল্টা সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নবিরোধী একটি মহল মানুষকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। আমরা এতদিন খোঁজার চেষ্টা করছিলাম এর পেছনে শক্তিটা কোথায়? এতদিন পরে আমরা দেখলাম, খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে এই অপপ্রচারে সংহতি প্রকাশ করেছেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করার নামে খাম্বা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা লুট করেছিল। আর আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। সেটা দিয়ে আলো জ্বলে-এসি চলে, সেখানে বসে আমাদের সমালোচনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম। শুরুতেই সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তারপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। প্রধানমন্ত্রী চার পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রসঙ্গ ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির (আগামীকাল) ঢাকা সফর, নারায়ণগঞ্জে পুলিশের অভিযানে গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী নিহত, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের আসন্ন সফর সংক্রান্ত নিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয়ে আলোকপাত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের খুঁটির জোর এতদিন পাওয়া যায়নি। এবার আন্দোলনের খুঁটির জোর পাওয়া গেছে। বিএনপি নেত্রী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এসেছেন। আমার মনে হয়, এর মধ্যে ষড়যন্ত্র আছে। না হলে এতদিন বিএনপি নেত্রী এর বিরোধিতা করেননি কেন? শেখ হাসিনা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে যদি কোনো নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই থাকত, তাহলে তারা (বিএনপি) অনেক আগেই তা জনসম্মুখে প্রকাশ করত। বিরোধিতাকারীরা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে নাকি সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। আসলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। তিনি এ প্রকল্প সরানোর দাবি প্রত?্যাখ?্যান করে বলেন, এরা (বিরোধিতাকারীরা)  নিজেরা ভালো কিছু করতে পারে না। আবার কেউ ভালো কিছু করতে গেলে তাতে বাধা দেয়। রামপালে সুন্দরবনের কথা বলে বিরোধিতা করছে। কিন্তু আনোয়ারায় সুন্দরবন নেই। কিন্তু সেখানেও বিরোধিতা করছে কেন? এদের কথা শুনতে গেলে তো কোনো উন্নয়ন কাজেই হাত নেওয়া যাবে না। আপনাদের কথায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিলে বিদ্যুৎ পাবেন না। হারিকেন নিয়ে অন্ধকারে বসে থাকতে হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি না দিতে ফোন করেছিলেন, আগামীকাল তার বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে, এখন যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকরে বাধা আসবে কিনা, কিংবা তার এ সফরে কী ধরনের মেসেজ থাকবে বলে মনে করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (জন কেরি) আসবেন, কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন, তা এখনই বলা যাবে না। কী আলোচনা হয়, পরে আপনাদের জানানো হবে। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, আমি জাতির পিতার কন্যা। জাতির পিতা যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছিলেন। কোনো বাধাই আমার নীতি থেকে টলাতে পারবে না। বিএনপি আবার কী ভারতবিরোধী রাজনীতি শুরু করেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা উপরে উপরে ভারতবিরোধী রাজনীতি করে। আর তলে তলে গিয়ে পায়ে ধরে বসে থাকে। জিয়া-এরশাদ-খালেদা কেউই ভারত থেকে আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি। জাতির পিতা সীমান্তচুক্তি করেছিলেন। আমিই আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে বন্ধুত্ব সম্পর্ক বজায় রেখে সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। ফারাক্কা চুক্তি বাস্তবায়ন করেছি। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। বিভিন্ন গ্যাস-এসিড নিঃসরণে উচ্চপ্রযুক্তির যন্ত্রপাতি বসানো হবে। বাতাসে ওড়া ছাই ধরে রাখার ব্যবস্থা হবে। এই ছাই আবার সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহার হবে। সঠিক ব্যবস্থাপনায় সালফার গ্যাস শোষিত হবে। এই গ্যাস থেকে জিপসাম সার তৈরি হবে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের চিমনির উচ্চতা হবে ২৭৫ মিটার। এই চিমনি দিয়ে যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হবে তা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১.৬ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্য যেসব গ্যাস সামান্য পরিমাণে বের হবে সেগুলোর ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি মাত্রার চেয়ে অনেক কম হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি করে বলে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুরে আসেন। বড়পুকুরিয়া একটা সাব-ক্রিটিক্যাল। সাব-ক্রিটিক্যাল ও আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্লান্টের মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২০০০ সালে কাজ শুরু হয়। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া সেটা বন্ধ করেননি। তখন কোনো মায়া কান্নাও ছিল না। আপনারাও লিখতে পারেননি কোনো ক্ষতি হয়েছে। তাহলে এটা নিয়ে কেন কথা হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন রক্ষায় তার সরকারের কিছু পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, আমাদের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে সুন্দরবনের আয়তন দিন দিন বাড়ছে। গাছের ঘনত্ব বাড়ছে। উপকূল এলাকায় সুবজবেষ্টনী সৃষ্টি করা হয়েছে। নতুন জেগেওঠা চরে গাছ লাগিয়ে সেগুলোর ভূমিক্ষয় রোধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ মরে গেছে। মানুষ গাছপালা কেটে সাবাড় করেছে। মানুষের যাতে সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করতে না হয়, সে জন্য আমরা তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। সুন্দরবনে নতুন করে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করেছি। গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমরা আইন তৈরি করেছি। বাঘ সংরক্ষণে টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করেছি। আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে দেশে বনভূমির পরিমাণ ২০০৫-০৬ সালের ৭-৮ শতাংশ হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪-১৫ সালে ১৭.০৮ শতাংশ হয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণে আধা ডজনের বেশি আইন করেছি। পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য আমরা সংবিধানে মৌলিক পরিবর্তন এনেছি। সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতে ১৮ক নামে একটি নতুন ধারা সংযোজন করেছি।

রামপাল আন্দোলনে তারা ফুয়েল পাচ্ছে কোথায় : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে কি না এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যদি বন্ধ করে দেওয়া হয়, আমরা যতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছি সবগুলো যদি বন্ধ রাখা হয়, তখন কী হবে? তিনি বলেন, যারা রামপালের বিরোধিতা করে যাচ্ছে তাদের যদি ডেকে আমি বোঝাই, তাতেও তাদের কানে পানি যাবে না। আমি জানি, কারণ বাংলাদেশের সবাইকে আমার চেনা, অচেনা নয়, কার মুখ থেকে কোন কথা কোন কারণে বের হয়, সেটা জানা আছে। আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী উনাদের (আন্দোলনকারী) সঙ্গে বসে আলোচনা করেছেন। তাদের কয়েকজনকে হেলিকপ্টারে করে রামপালে ঘোরানো হয়েছে। পরে আমি বলেছি, হেলিকপ্টারে নিয়ে গেলে হবে না, তাদের রামপালে নিয়ে যেতে হবে গাড়িতে। কারণ রামপাল থেকে সুন্দরবন কতদূর হেলিকপ্টারে গেলে তো বুঝবে না। সড়ক পথে নিয়ে গেলে বিষয়টি বুঝবে, তা না হলে বুঝবে না। রামপাল নিয়ে আন্দোলনে অর্থায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, এই যে শত শত মানুষ একখানে রোডমার্চ করে। আন্দোলনে ফুয়েল লাগে, উনারা ফুয়েল কোথা থেকে পাচ্ছেন?  প্রধানমন্ত্রী বলেন, (আন্দোলনকারীদের সঙ্গে) বসা যে হয়নি তা নয়, বসা হয়েছে। আসলে তারা তো কোনো একটা কিছু মাথায় নিয়ে এ আন্দোলনটা করে যাচ্ছে। আমাদের উন্নয়নটাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। আমরা পারি কেন, এখানেই তাদের ক্ষোভ। তিনি বলেন, যারা আন্দোলন করছেন তারা কিন্তু রামপালে যাননি। যখন লংমার্চ করতে চাইল, তখন বললাম যেতে দেন যতদূর যেতে পারে। তারা বোধহয় খুলনা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসে, রামপালে আর যায়নি। আমি চাচ্ছিলাম রামপালে যাক, উনারা আন্দোলন ঢাকায় বসে করেন কেন? আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই জায়গা নষ্ট হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারা যদি এতটা  বোঝেন, ওখানকার লোকজনকে বোঝানো উচিত। কাজেই একবার একটু রামপালে গিয়ে বলুক, বিদ্যুৎকেন্দ্র এখানে হবে না, হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। এ জিনিসটা তারা একটু করতে যাক। তখনই উনারা জবাব পেয়ে যাবেন, মানুষ কী চায়। আমাদের কিছু করা লাগবে না, ওখানকার পাবলিকই করে দেবে যা করার। আর আমি কিছু বলতে চাই না।

আমরা পিছিয়ে যাওয়ার লোক নাকি : বিশ্বের ১৭৭টি সংগঠনের পক্ষ থেকে এক্সিম ব্যাংককে অর্থায়ন না করতে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে গেলে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বিকল্প কী ব্যবস্থা নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কোন কোন সংগঠন এ ধরনের চিঠি দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। একই সঙ্গে তিনি জানান, এক্সিম ব্যাংক সরে গেলে পদ্মা সেতুর মতো সরকার প্রয়োজনে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রও নিজ অর্থায়নে করবে। তিনি বলেন, ভারতের এক্সিম ব্যাংকের  রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ৭০ শতাংশ অর্থায়ন করার কথা। ব্যাংকটি এ অর্থায়ন না করলে বিকল্প ব্যবস্থায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পিছিয়ে যাওয়ার লোক নাকি?’ তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংক সরে গেলেও আমরা পিছিয়ে যাইনি। আমরা নিজেরাই পদ্মা সেতু করছি। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যদি এক্সিম ব্যাংক সরে যায়, তাহলে এটা আমরাই করব।

জঙ্গিরা মরে গেলে মায়াকান্না, তাদের সঙ্গে যোগাযোগটা কী : নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তামিম চৌধুরী গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। আমরা তাকে অনেকদিন ধরে খুঁজছিলাম। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা ঠিকই তাদের খুঁজে বের করেছে। সেখানে তারা পুলিশের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। হলি আর্টিজানের মূল যে হোতা ছিল, সেই জঙ্গি খতম হয়ে হয়েছে। কাজেই দেশ আরেকটা অভিশাপমুক্ত হলো। তিনি বলেন, তবে অনেকেই হয়তো আবার প্রশ্ন তুলবে, তাদের মেরে ফেলা হলো কেন? বাঁচিয়ে রাখা হলো না কেন? বেঁচে থাকলে তো অনেক তথ্য পাওয়া যেত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা মরে গেলে তাদের জন্য কেন কান্না? তাদের যোগসূত্রটা কী? গুলশান হলি আর্টিজানে জঙ্গিরা মেট্রোরেল নির্মাণকর্মীদের খুন করেছেন। বাংলাদেশকে যখন সবাই বিনিয়োগের নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে, সেই উন্নয়নকে থামিয়ে দেওয়াই যেন উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গিদের। সেই হত্যাকারী আর উন্নয়নের বাধা সৃষ্টিকারীদের সঙ্গে আমি কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না।

সর্বশেষ খবর