মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

কেরি কী দিলেন কী নিলেন

পার্টনার নয় বন্ধু হতে চায়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই

জুলকার নাইন

কেরি কী দিলেন কী নিলেন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে গতকাল নিজ কার্যালয়ে বিদায়ী অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা —বাসস

ঢাকায় তাত্পর্যপূর্ণ ঝটিকা সফর করে গেলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বৈঠক করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আন্তরিকতার রূপ দিতে চেয়েছেন মার্কিন প্রশাসনের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর এই রাজনীতিক। ঘণ্টাব্যাপী কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে শুনেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কথা। প্রকাশ্য ভাষণে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শুধু উন্নয়ন অংশীদার (পার্টনার) নয়, বন্ধু হতে চায়। ঘোষণা দিয়েছেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে থাকার। প্রস্তাব দিয়েছেন ‘বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দাদের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার এবং জঙ্গিবাদ  মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাহায্য করার।’ জিএসপি নিয়ে কথা না বললেও একমত হয়েছেন অর্থনৈতিক বাজার সম্প্রসারণের। আশ্বাস দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার।

সবকিছু ছাপিয়ে লক্ষণীয়ভাবে জন কেরির কণ্ঠে একাধিক দফায় উচ্চারিত হয়েছে বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা। জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এমন মন্তব্য  নিজ হাতে লিখে স্বাক্ষর করেছেন জন কেরি। সফর শেষ করে ব্যক্তিগত টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অসাধারণ একটি উন্নয়ন গল্প আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে বেশ আনন্দিত।’ তবে বহুল আলোচিত এই সফরে সম্প্রীতির বার্তার বাইরে বাংলাদেশকে জন কেরি কী দিলেন এবং বিনিময়ে কী নিলেন তা জানতে হয়তো আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সহযোগিতা অবশ্য নিতে হবে, তবে যখন প্রয়োজন হবে তখন তা সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশই জানাবে।’ জানা যায়, পরপর ব্লগার হত্যা, একাধিক বিদেশি হত্যা, মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা হত্যার ধারাবাহিকতায় গুলশান ও শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার পরের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসেন জন কেরি। সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতির আগে একাধিক ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মার্কিন সরকারের সম্পর্কের ওঠানামাও ছিল দৃশ্যমান। এমন হিসাব-নিকাশের মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিজ মেয়াদের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে গতকাল সকাল ১০টার পরপরই বিশেষ বিমানে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জন কেরি। জেনেভা থেকে আসা ইউএস এয়ারফোর্সের বিমানটি বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে এলে জন কেরিকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এরপর একে একে তাকে অভ্যর্থনা জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জন কেরির সঙ্গে আসেন মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল, জন কেরির চিফ অব স্টাফ জন ফিনার, ডেপুটি মুখপাত্র মার্ক টোনারসহ কয়েকজন সহকর্মী। সঙ্গে আছেন সিএনএন, এপিসহ পাঁচটি মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। পরে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে দীর্ঘ যাত্রা করা জন কেরি কাছেই একটি হোটেলে স্বল্পসময়ের বিশ্রাম নেন। ঘণ্টাখানেকের বিশ্রাম শেষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাসভবন ও বর্তমান বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে চলে যান জন কেরি। সেখানে ১১টা ৪২ মিনিট থেকে ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করে গভীর মনোযোগ দিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নৃশংসতার চিহ্ন দেখেন। বঙ্গবন্ধুর পাঠকক্ষ, বেডরুম ও রক্তমাখা সিঁড়িতে নৃশংসতার চিহ্ন দেখে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ জানতে চান কেরি। সেখানে উপস্থিত বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও শেখ রেহানার ছেলে রেদোয়ান সিদ্দিক ববি তাকে বিবরণ জানান। পরে মর্মাহত জন কেরি শোকবইতে স্বাক্ষর করে চলে যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। কেরি ১২টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কার্যালয়ে ঘণ্টাব্যাপী কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। সেখানেও বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতার কথা নিজেই উত্থাপন করে দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে নিরাপত্তা, সহযোগিতাসহ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোয় আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায়। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। পরে অতিথির সৌজন্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে ওয়েস্টার্ন নানান পদের খাবারের পাশাপাশি বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খাবারের পদ ও পিঠা খান জন কেরি। মধ্যাহ্নভোজ শেষের মাধ্যমেই শেষ হয়ে যায় সরকারি কর্মসূচি। এ সময় বাংলাদেশের কয়েকজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পীর চিত্রকর্ম তুলে দেওয়া হয় জন কেরির হাতে। এরপর দূতাবাসের আয়োজিত কর্মসূচি অনুসারে বিকাল ৩টায় মিরপুরের শেওড়াপাড়ার কে টেক্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল নামের একটি গার্মেন্ট কারখানা ঘুরে দেখতে যান। বিকাল সাড়ে ৩টায় ধানমন্ডিতে এডওয়ার্ড কেনেডি সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তরুণ ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বক্তৃতা দেন। সেখানেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের। পরে জন কেরি চলে যান বারিধারায় যুক্তরাষ্ট্রের চ্যান্সেরি কমপ্লেক্সে। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৈঠক করেন মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নয়া দিল্লির উদ্দেশে বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও সচিব শহীদুল হক।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়ার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একসঙ্গে লড়াই করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। প্রস্তাব দেন বিশেষজ্ঞ সহায়তার। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অস্ত্র ছাড়া সব ধরনের বাংলাদেশি পণ্যের ‘শুল্ক ও কোটামুক্ত’ প্রবেশাধিকার চান। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের বাজারে আরও মার্কিন বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। শেখ হাসিনা ও জন কেরির বৈঠকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের তথ্য আদান-প্রদানের প্রয়োজন রয়েছে। টেররিজমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-ইউএস একসঙ্গে লড়াই করবে। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও ‘ঘনিষ্ঠভাবে’ যুক্তরাষ্ট্রের কাজ করার কথা উত্থাপন করে জন কেরি বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট এক্সপার্টিজ আছে। এ ছাড়া প্রযুক্তি সুবিধায় এগিয়ে থাকায় জঙ্গি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অনেক তথ্য আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সেসব তথ্য তারা আমাদের দিলে জঙ্গি ধরতে সুবিধা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইএস ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় তাদের বিদেশি যোদ্ধারা (যারা সিরীয় নন) নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী তখন জন কেরির কাছে জানতে চান, আইএসের অর্থ ও অস্ত্র কোথা থেকে আসছে। জবাবে কেরি বলেন, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের দখল করা খনি থেকে তেল বিক্রি করে অর্থ পাচ্ছে তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদকে একটি ‘বৈশ্বিক সমস্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে বাংলাদেশে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, স্বাস্থ্য ও জ্বালানি খাতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে বলে মত দেন জন কেরি। বাংলাদেশের উন্নতির প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দুর্দান্ত কাজ করছেন।’ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অন্যান্য ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বের বিষয়েও কথা বলেন কেরি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় জন কেরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সিনেটর এডওয়ার্ড মুর কেনেডির (টেড কেনেডি) সমর্থনের কথাও তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। জবাবে জন কেরি বলেন, ‘আমি আপনার বেদনা অনুধাবন করতে পারি। বিষয়টি বিবেচনায় আছে।’ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জন কেরিকে বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’— এই পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার কাজ করছে। বৈঠকের সময় নিশা দেশাই বিসওয়াল, মার্শা বার্নিকাটসহ মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ছিলেন কেরির সঙ্গে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম প্রমুখ। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকের সময়।

নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা : রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জন কেরি ও মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে দুই দেশের ১০ জন করে প্রতিনিধি অংশ নেন। এতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী জানান, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রশংসা করেছেন জন কেরি। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও নিরাপত্তা ইস্যুতে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এভাবে এখানে বলা ঠিক হবে না। এ ইস্যু ছাড়া আরও বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে। দুই দেশের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের বিষয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন জন কেরি।’

জিএসপি নিয়ে কথা হয়নি, হয়েছে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে : দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উপস্থিত থাকা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘জিএসপি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ নিয়ে কথা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রায়োরিটি কী, তা কেরি জানতে চেয়েছেন। আমরা ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধার কথা বলেছি।’

জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন তথ্য বিনিময়, নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ও সুশাসন : ইএমকে সেন্টারে বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায় ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বক্তৃতায় কেরি বলেন, জঙ্গিবাদ দমনের জন্য প্রয়োজন তথ্য বিনিময়, নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ও সুশাসন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র শুধু বাংলাদেশের পার্টনার নয়, বন্ধু হতে চায় বলেও মন্তব্য করেন। কেরি বলেন, ‘গুলশান হামলা চালানো হয়েছিল বাংলাদেশকে বিভক্ত করার উদ্দেশ্যে। সম্প্রীতির বাংলাদেশে এটা কখনই সম্ভব নয়। তাই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র পাশে আছে এবং থাকবে।’ বক্তব্যের পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে কেরি বলেন, ‘নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মতবিরোধ আছে বলে আমি মনে করি না।’

সফর শেষে টুইটারে বার্তা : সফর শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দুটি বার্তা দিয়েছেন জন কেরি। প্রথম টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয় এবং সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলায় আমাদের দৃঢ় সমর্থন নিয়ে আজ বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।’ দ্বিতীয় বার্তায় কেরি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের একটা অসাধারণ উন্নয়ন গল্প রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে আমি আনন্দিত।’

আবার আসতে চান কেরি : দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আবার বাংলাদেশ সফরের আগ্রহের কথা জানান জন কেরি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের জানান, ‘জন কেরি বলেছেন, তিনি আবারও বাংলাদেশ আসতে চান। আমরাও তাকে বলেছি, আপনি আজকের মতো যে কোনো সময় আসতে পারেন।

সর্বশেষ খবর