বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

দালালমুক্ত পাসপোর্ট অফিস চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

দালালমুক্ত পাসপোর্ট অফিস চাই

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সেবার মান বাড়াতে পাসপোর্ট অধিদফতরকে সর্বক্ষেত্রে দালালমুক্ত করতে হবে। দালালদের জন্যই পাসপোর্ট অফিসের বদনাম হয়। তিনি গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কার্যক্রমের ওপর দুদক আয়োজিত গণশুনানিতে এসব কথা বলেন। গণশুনানিতে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রিজওয়ানসহ দুদক ও পাসপোর্ট অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া গণশুনানিতে পাসপোর্ট অফিসের নানা ধরনের অনিয়ম নিয়ে ১০ জন তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি আছে, তবে আগের চেয়ে কমেছে। সব মিলিয়ে নাগরিকদের সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও তা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি পাসপোর্ট অধিদফতর। অনলাইন সেবা চালুর পর দুর্নীতি কিছুটা কমেছে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনে হয়রানি হয়। তারা টাকা ছাড়া কাজ করেন না। আমরাও আশা করব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টা খতিয়ে দেখবে। ইকবাল মাহমুদ বলেন, এই গণশুনানির উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের সেবা পাবে আর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান জনগণকে কী সেবা দেবে তা অবহিত করা। সেগুলো জনগণ যেন জানতে পারে। পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনে রাখতে হবে, সেবাপ্রত্যাশী জনসাধারণ সবাই তো মামলার আসামি কিংবা অপরাধী নয়। তার পরও পুলিশ তদন্তের নামে এক থেকে দুই হাজার টাকা নেয়। এ ছাড়া যারা সেবা নিতে আসেন তাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আর যারা সেবা দেবেন তাদেরও ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের তালিকাও পাসপোর্ট অফিসে থাকা দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, আমরা চাই দুর্নীতি ঘটে যাওয়ার আগে প্রতিরোধ করতে। আরও মনে রাখতে হবে সেবার নামে যেন কোনো ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ না হয়। কালক্ষেপণ দুর্নীতির জন্ম দেয়।

পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রিজওয়ান বলেন, আমরা সেবাগ্রহীতাদের সব অভিযোগ খতিয়ে দেখি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দালিলিক প্রমাণ না থাকায় অভিযোগকারী শনাক্তে কিছুটা বেগ পেতে হয়। তিনি আরও বলেন, পাসপোর্ট আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে, তাদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন ফরমে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার স্বাক্ষর না রাখার পক্ষে মত দেন তিনি। সরকারি দফতরগুলোয় সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গণশুনানির আয়োজন করে থাকে দুদক। এর আগে ঢাকায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সাবরেজিস্ট্রি অফিসসহ একাধিক দফতর নিয়ে গণশুনানি করেছে সংস্থাটি। ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, ঢাকার সাভার, সৈকত শহর কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংস্থার পক্ষ থেকে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। এসব শুনানিতে ভুক্তভোগীরা তাদের অভিযোগ পেশ করেন। উপস্থিত সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা অভিযোগ অনুসারে বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর