বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অবশেষে ধরা পড়ল রিশার খুনি ওবায়দুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে ধরা পড়ল রিশার খুনি ওবায়দুল

অবশেষে ধরা পড়েছে রিশার খুনি ওবায়েদুল। রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলার আসামি ওবায়েদুল হককে গতকাল গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকাল ৮টার দিকে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রিশার খুনি গ্রেফতারের তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রিশার  মা তানিয়া হোসেন বলেন, মেয়েকে আর ফিরে পাব না। এখন আমরা আসামির দ্রুত বিচার দাবি করছি। বাবা রমজান হোসেন বলেন, আসামি ধরা পড়েছে এ খবর শুনে মনের কষ্ট কিছুটা হলেও কমেছে। আমিও মেয়ে হত্যার দ্রুত বিচার চাই। পুলিশের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আসামি গ্রেফতার হওয়ায় সব ধরনের কর্মসূচি স্থগিত করেছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। অভিভাবক ফোরামের সদস্য সচিব আঞ্জুমান আরা বলেন, যেহেতু আসামি গ্রেফতার হয়েছে। তাই আমরা আর কোনো কর্মসূচিতে যাব না। একই স্কুলের ৪র্থ শ্রেণিতে পড়া রিশার ছোট ভাই রবি হোসেন এবং ২য় শ্রেণিতে পড়া বোন রোদেলার বিনা খরচে লেখাপড়ার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষ নিয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে রিশার খুনি গ্রেফতার হওয়ায় রাজধানীর সব স্কুলে আজকের (বৃহস্পতিবার) মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মো. জিয়াউল কবির দুলু। অভিযুক্ত আসামি ওবায়েদুলের গ্রেফতারের বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আমরা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাল (বৃহস্পতিবার) রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করব।

আমাদের নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, আসামি ওবায়েদুলকে ধরতে সারা দেশের মতো নীলফামারীর বিভিন্ন এলাকায় তার ছবি বিতরণ করা হয়। সোনারায় বাজারে উপস্থিত লোকজনকে মঙ্গলবার বিকালে তার ছবি দেখানো হয়। গতকাল সকালে ওবায়েদুলকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে ডোমারের সোনারায় বাজারের এক মাংস বিক্রেতা তাকে একটি চায়ের দোকানে বসিয়ে রেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আসামিকে গ্রেফতার করে ডোমার থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে বেলা ১২টার দিকে আসামি ওবায়েদুলকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন মহানগর পুলিশের একটি দল এবং রাত ১০টায় ঢাকায় এসে পৌঁছেন। ডোমার থানায় তাত্ক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান জানান, পুলিশ, র্যাব ও ডিএমপি সদস্যদের উপস্থিতিতে ওবায়েদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওবায়েদুলকে ধরতে ঢাকার রমনা বিভাগের এডিসি আজিমুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ডোমার থানা পুলিশের সহায়তায় সোনারায় বাজারসহ আশপাশের এলাকায় মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালায়। এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে ওবায়েদুলের ছবিও বিতরণ করা হয়। তাকে দেখা মাত্র পুলিশে খবর দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ অধিনায়ক এ টি এম আতিক উল্লাহ, ঢাকা রমনা বিভাগের এডিসি আজিমুল হক, সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির উপস্থিত ছিলেন। গ্রেফতারকৃত ওবায়দুল হকের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গি গ্রামে। সে মৃত আবদুস সামাদের ছেলে। গত ২৪ আগস্ট পরীক্ষা শেষে বের হওয়ার সময় সুরাইয়া আক্তার রিশাকে স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে ছুরিকাঘাত করা হয়। রবিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় রিশার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার মা তানিয়া হোসেন রমনা থানায় এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়েদুলকে আসামি করে মামলা করেন। এদিকে গতকাল রামপুরায় পানিতে ডুবে তামজিব পিয়ান অনিক (১৭) নামের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। সে বনশ্রীর সি ব্লকের ২ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আজিজুল হক ও তৌহিদা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান। মৃতের মামা মঞ্জুরুল হক জানান, আফতাবনগরের একটি মাঠে ফুটবল খেলছিল অনিক। পরে সে তার বন্ধুদের সঙ্গে পাশের পুকুরে গোসল করতে নামে। এ সময় সে পানিতে তলিয়ে গেলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সর্বশেষ খবর