সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাল ঈদুল আজহা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে আগামীকাল মঙ্গলবার উদযাপিত হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করে পশু কোরবানির মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে নিজের সামর্থ্যকে সমর্পণ এবং অন্তর্গত লোভ ও পশুত্বকে বিসর্জন দেন। ঈদুল আজহা আমাদের দেশে কোরবানির ঈদ হিসেবে পরিচিত। ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ তকবিরের সঙ্গে সবাই ঈদগাহ অথবা মসজিদে হাজির হবেন।

এবার ঈদের আগমুহূর্তে যখন সবাই ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত তখন (শনিবার) টঙ্গীর একটি প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণে কেড়ে নিয়েছে অনেক প্রাণ।  নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তাদের শোকার্ত পরিবারে ঈদের আনন্দ বদলে গেছে শোকের মাতমে। প্রতিটি পরিবারে চলছে কান্না ও আহাজারি। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কেড়ে নিয়েছে অনেক পরিবারের ঈদের আনন্দ।

প্রতিবছরের মতো কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সারা দেশ মেতে উঠেছে উৎসবের আনন্দে। পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের উৎসবে শামিল হতে পথের ক্লান্তি ভুলে সবাই ছুটেছেন গ্রামের বাড়িতে। এ মুহূর্তে কোরবানির পশুর হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট। ইতিমধ্যে ঈদ উদযাপনের অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে দেশব্যাপী নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদ জামাতে জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু বহন না করতে র‌্যাবের পক্ষে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজধানীতে এবারও নির্দিষ্টস্থানে পশু কোরবানির উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন।

মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মুসলমান জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই ঈদ। তিনি স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে প্রিয়পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে ১০ জিলহজ তারিখে আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করতে উদ্যত হয়েছিলেন। আল্লাহতায়ালা ইব্রাহিম (আ.)-এর এই উদ্যোগে খুবই সন্তুষ্ট হন এবং সন্তুষ্টির নিদর্শন হিসেবে বেহেস্তি দুম্বা পাঠিয়ে তার প্রিয় বন্ধুর আত্মত্যাগের নিয়তকে কবুল করে নেন। সেই থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রতিবছর এই দিনে পশু কোরবানি করা ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নাত। আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) উম্মতে মোহাম্মদির জন্যও পশু কোরবানি ওয়াজিব ঘোষণা করেছেন। জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো দিন পশু কোরবানি করা যায়। তবে রসুলুল্লাহ (সা.) ১০ জিলহজ পবিত্র ঈদুল আজহার দিন কোরবানি করাকেই উত্তম ঘোষণা করেছেন।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল থেকে চার দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলো জাতীয় ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে। কাল সব সরকারি-বেসরকারি ভবনেও জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা উত্তোলন করা হবে। কারাগার, হাসপাতাল, ভবঘুরে কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, শিশুসদনে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। ঈদ আনন্দের অংশ হিসেবে রেডিও, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ঈদ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর