শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাকিবকে নামিয়েই বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার

দরজা খুলে ভিডিও করায় দুর্ঘটনা

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সাকিবকে নামিয়েই বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার

কক্সবাজারের উখিয়ায় গতকাল বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার। দুর্ঘটনার কয়েক মিনিট আগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এটা থেকে নামেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ক্রিকেটের ‘বরপুত্র’ সাকিব আল হাসান। বড় দুঃসংবাদ থেকে বেঁচে গেল বাংলাদেশ এবং বিশ্ব ক্রিকেট। গতকাল সকালে ঈগল-বি বিজ্ঞাপনী সংস্থার বিজ্ঞাপনে শুটিং করতে কক্সবাজার উড়ে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। তাকে নামিয়ে ফেরার পথে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় উখিয়ার রেজু নদী সংলগ্ন সাগর মোহনায়। দুর্ঘটনায় বিজ্ঞাপনী সংস্থা ঈগল-বির কর্মকর্তা শাহ আলম মারা যান। পাইলটসহ আহত হন তিনজন। তবে সুস্থ আছেন টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক সাকিব। টুইটারে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন তার ভালো থাকার বিষয়টি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অনুশীলন নেই। শুরু হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। হাতে সময় থাকায় বিজ্ঞাপনে অংশ নিতে সাকিব উড়ে যান কক্সবাজার। সাকিবকে নিয়ে যায় মেঘনা অ্যাভিয়েশনের রবিনসন আর ৬৬ মডেলের হেলিকপ্টারটি। সকাল সাড়ে ৯টায় সাকিবকে হেলিকপ্টারটি নামিয়ে দেয় ইনানী সৈকতের রয়েল টিউলিপ হোটেলে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে নামিয়ে ফের ঢাকার পথে রওনা দেয় যাত্রী নিয়ে। রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়ার রেজু নদীর মোহনায় বিধ্বস্ত হয় হেলিকপ্টারটি। এ প্রসঙ্গে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের বলেন, ‘সকালে ইনানী এলাকার হোটেল রয়েল টিউলিপে ক্রিকেট তারকা সাকিবকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। তাকে নামিয়ে হেলিকপ্টারটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা ঈগল-বির লোকজন নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। হেলিকপ্টারটি সোনার পাড়ার রেজু নদীর মোহনায় পৌঁছলে বিধ্বস্ত হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা ধরাধরি করে আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে একজন মারা যান।’ কক্সবাজার সদর থানার এসআই ওমর ফারুক একজনের নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে থাকা মৃতদেহ ঈগল-বি নামে বিজ্ঞাপনী সংস্থার কর্মকর্তা শাহ আলমের। দুর্ঘটনা ঘটার সময় হেলিকপ্টারে চালক ছাড়াও ওই সংস্থার কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে ছিলেন।’ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী জানান, সাকিবকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ঢাকায় ফেরার পথে বিধ্বস্ত হয়। তবে কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মোহন্ত হেলিকপ্টারটির কক্সবাজারে আসার খবর জানতেন না বলে জানান। তিনি বলেন, ‘হেলিকপ্টারটি কক্সবাজারে প্রবেশের সময় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত এবং অবতরণের অনুমতি নেয়নি। দুর্ঘটনার বিষয়ে আমি পুরোপুরি অবহিত নই।’ মেঘনা এভিয়েশনের মার্কেটিং ম্যানেজার খোরশেদ আলম বলেন, ‘সাকিবকে নামিয়ে হেলিকপ্টারটি ঢাকায় ফিরে আসার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।’ তিনি বলেন, ‘উইং কমান্ডার শফিকুল ইসলাম আমাকে বলেছেন, হেলিকপ্টারের দরজা খোলা রেখে ভিডিও করছিলেন নিহত শাহ আলম। তাকে নিষেধ করেছিলেন পাইলট। কিন্তু শোনেননি। দরজা খোলা রেখে ভিডিও করার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।’ কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান খোরশেদ আলম। অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া সাকিব টুইটারে লিখেছেন, ‘আমরা নিরাপদে ল্যান্ড করেছি। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কোনো সমস্যা নেই।’ দুর্ঘটনাটি নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) উচিত ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়ে বাড়তি নজর দেওয়া।

সর্বশেষ খবর