বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঈদে ২১০ দুর্ঘটনায় নিহত ২৬৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদযাত্রায় দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ২১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৬৫ জন নিহত ও ১ হাজার ১৫৩ জন আহত হয়েছেন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি। সংগঠনের সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এ প্রতিবেদন তৈরি করে। সম্মেলনে লিখিত প্রতিবেদন পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদুল ফিতরে ঈদযাত্রা অনেকটা স্বস্তিদায়ক হলেও ঈদুল আজহায় মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তির পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ দিনে ১৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬ জন। একই সময়ে ৮টি নৌ দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হন। এ সময় রেলে কাটা পড়ে ৭ জন নিহত, চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ৫০ জন আহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় সর্বমোট ২৬৫ জন নিহত ও ১ হাজার ১৫৩ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭ সেপ্টেম্বর ১৬টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ২৪ জন আহত, ৮ সেপ্টেম্বর ১২টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৩২ জন আহত, ৯ সেপ্টেম্বর ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ১৮৫ জন আহত, ১০ সেপ্টেম্বর ১৫টি দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত ও ৫৪ জন আহত, ১১ সেপ্টেম্বর ২০টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ১৭৬ জন আহত, ১২ সেপ্টেম্বর ১৩টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৫৪ জন আহত, ১৩ সেপ্টেম্বর ১০টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ২১ জন আহত, ১৪ সেপ্টেম্বর ২৭টি দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত ও ১৬৪ জন আহত, ১৫ সেপ্টেম্বর ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ৮৭ জন আহত, ১৬ সেপ্টেম্বর ২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ১৮৩ জন আহত, ১৭ সেপ্টেম্বর ২৯টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও ১০৪ জন আহত, ১৮ সেপ্টেম্বর ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ৯২ জন আহত হন। সংগঠনটি উল্লেখ করে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৭২টিতে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, ২৭টি বাসচাপার ঘটনা ঘটে, ২০টি পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৮টি ট্রাকচাপার ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রোড ডিভাইডার না থাকা, ট্রাফিক আইন না মানা, অদক্ষ চালক, রাস্তার ত্রুটি, যাত্রীসাধারণের অসচেতনতা, অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন, ফিটনেসবিহীন-নিবন্ধনবিহীন ও অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে উঠে আসাসহ নানা কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করে যাত্রীকল্যাণ সমিতি।

দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে দ্রুতগতি ও ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা, দুর্ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা, রোড সেফটি অডিট নিয়মিত করা, প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তোলা, নসিমন-করিমন বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া, ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ নেওয়াসহ নানা সুপারিশ করে সংগঠনটি। সম্মেলনে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান, বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা কাজী মাসুদ আহম্মেদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি রুস্তম আলী খান, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর