বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চলে গেলেন বিএনপি নেতা হান্নান শাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলে গেলেন বিএনপি নেতা হান্নান শাহ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ আর নেই। বাংলাদেশ সময় সোমবার দিবাগত ভোর রাত ৩টা ৩৭ মিনিটে সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস হার্ট সেন্টার হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী নাহিদ হান্নান, মেয়ে শারমিন হান্নান সুমি এবং দুই ছেলে শাহ রেজাউল হান্নান ও শাহ রিয়াজুল হান্নানকে রেখে গেছেন। হান্নান শাহর মৃত্যুতে চার দিনের শোক ঘোষণা করেছে বিএনপি। গাজীপুর জেলা বিএনপি তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোক বই খোলা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ দেশে আনা হবে। কয়েক দফা জানাজা শেষে শুক্রবার গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর অসুস্থ হলে তাকে জরুরিভাবে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে তার সফল অস্ত্রোপচার হয়। হান্নান শাহর মৃত্যুতে পৃথক বার্তায় শোক প্রকাশ ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ নেতার মৃত্যুর খবরে দলের নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। হান্নান শাহের মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল সকালে মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ দলের নেতা-কর্মীরা। মির্জা ফখরুল তার বড় ছেলে শাহ রেজাউল হান্নানসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সমবেদনা জানান। বড় ছেলে শাহ রেজাউল হান্নান জানান, সিঙ্গাপুরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বুধবার সন্ধ্যায় তার বাবার মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মহাখালী ডিওএইচএস মসজিদে, সাড়ে ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এবং জোহরের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তার জানাজা হবে। ওই দিন হান্নান শাহের মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রেখে শুক্রবার সকালে সড়ক পথে গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল ৯টায় জয়দেবপুর রাজবাড়ী মাঠে, সাড়ে ১০টায় কাপাসিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এবং জুমার পর প্রয়াতের নিজ গ্রাম চালা বাজার উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে বাবার কবরের পাশেই দাফন করা হবে।  গতকাল এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এ নেতার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শোকবার্তায় বলেন, জাতীয় জীবনে বর্তমান ক্রান্তির সময়ে তাকে যখন খুব দরকার, সে সময়ে তিনি চলে গেলেন।

জাতি হারালো তার সাহসী সন্তানকে। এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।

নানা মহলের শোক : বিকল্পধারা বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান অলি আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ সভাপতি জেবেল রহমান গানি, এনডিপির সভাপতি খন্দকার গোলাম মুর্তজা, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, ডিএল-এর সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন আলাদা শোক বার্তায় হান্নান শাহের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। এ ছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ওলামা দল, ছাত্রদল, জাসাস, ঢাকা জেলা বিএনপি, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর