বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিদের ল্যাপটপে রহস্যময় তথ্য

কলকাতা প্রতিনিধি

আটক জেএমবির সদস্য জঙ্গি আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে ইনাম ওরফে কালো ভাই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে র‌্যাবের সাহায্য নিতে পারে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। তাকে দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দাদের হাতে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর। সূত্রের খবর, আনোয়ারের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে র‌্যাবের সাহায্য নিতে পারেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। এদিকে আটক ছয় জেএমবি সদস্যের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপের যাবতীয় তথ্যের রহস্য উদঘাটনে টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হতে চলেছেন গোয়েন্দারা। দুই দিন আগে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই ছয় জঙ্গিকে আটক করে এসটিএফ। উদ্ধার করা হয় একটি ল্যাপটপসহ বেশকিছু জিনিস। গোয়েন্দারা যে ল্যাপটপটি উদ্ধার করেন তা বাংলাদেশের জামালপুরের বাসিন্দা আনোয়ারের বলে জানা গেছে। কিন্তু সেই ল্যাপটপে মজুদ থাকা বেশির ভাগ তথ্যই সাংকেতিক ভাষায়। স্বাভাবিকভাবেই সেই সাংকেতিক অক্ষরগুলোর অর্থ খুঁজে পেতে ঘাম ছুটছে এসটিএফ গোয়েন্দাদের। এসটিএফের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘ল্যাপটপ থেকে সাংকেতিক ভাষায় লেখা অনেক ফাইল পাওয়া গেছে। তবে এর বেশ কিছু ফাইল নষ্ট হয়ে গেছে। এ ফাইলগুলো উদ্ধারের জন্য কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।’  ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ল্যাপটপ থেকে এখনো যতটুকু উদ্ধার করা গেছে, তাতে জানা গেছে, আনোয়ারই জেএমবির পশ্চিমবঙ্গের প্রধান। সংগঠনের আর্থিক দিকটিও দেখতেন তিনি। ছয় জঙ্গির মধ্যে তিনিই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ আনোয়ারের কাছ থেকে একটি ডায়েরিও উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে সংগঠনের ‘গাছ’ বলে একটি কথা লেখা রয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, অত্যন্ত সংগঠিতভাবে এই জঙ্গি সংগঠনটি এ রাজ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কাছ থেকে সংগঠন সম্পর্কিত একটি তালিকাও পাওয়া গেছে। তাতে কিছুটা পরিষ্কার হওয়া গেছে, কে কাকে কী তথ্য দিয়েছিল। এসটিএফের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রে আনোয়ারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আরেক জঙ্গি মাওলানা ইউসুফ ওরফে ইউসুফ শেখ জেএমবির পশ্চিমবঙ্গের সেকেন্ড ইন কমান্ড। তিনিও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গের অনেক মাদ্রাসাই তিনি পরিচালনা করেন। রাজ্যে জিহাদি কর্মকাণ্ড বিস্তারে ইউসুফই প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন।’

 কয়েক মাস আগে বর্ধমান জেলার শিমুলিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন করেছিলেন ইউসুফ। বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণে এই মাদ্রাসা জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

তবে জঙ্গিরা ই-মেইল কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুব কম ব্যবহার করত বলে জানা গেছে। গোয়েন্দাসূত্রের খবর, জঙ্গিরা একটিমাত্র অ্যাপভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করত। তথ্য আদান-প্রদান কিংবা কোনো নির্দেশ সাধারণত ব্যক্তির মাধ্যমেই তারা করত। এমনকি ইউসুফ মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতেন না বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর