শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পে বিপ্লব

সাঈদুর রহমান রিমন

সারা দেশেই নাগরিক চোখের আড়ালে-আবডালে ঘটে চলেছে এক অভাবনীয় বিপ্লব। দেশীয় প্রযুক্তির ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ উদ্ভাবন, উৎপাদন ও বাজারজাতে বদলে গেছে দৃশ্যপট। এই কদিন আগেও অতিপ্রয়োজনীয় যেসব যন্ত্রপাতি-মেশিনারিজ শতভাগ আমদানিনির্ভর ছিল, আজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে সেসব রীতিমতো রপ্তানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রস্তুত মেশিনারিজ এখন চীন-ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্ববাজারে ঠাঁই করে নিচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায়ের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নিজ প্রচেষ্টায় অভাবনীয় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য মহলের সহায়তা আর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হালকা ও মাঝারি শিল্পের সফলতায় নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত গড়ে ওঠার সমূহসম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পে ব্যতিক্রমী সাফল্যের মাধ্যমে কয়েক যুগ ধরেই দৃষ্টান্ত হয়ে আছে জিঞ্জিরা। এখানকার ঝুপড়ি বস্তির অজস্র কারখানায় খুদে ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি করা হাজারো পণ্যসামগ্রীর কদর রয়েছে সর্বত্র। দেশ-বিদেশে ‘মেড ইন জিঞ্জিরা’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতিও আছে। রাজধানীর

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরঘেঁষা জিঞ্জিরা-শুভাড্যা থেকে শুরু করে কেরানীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়েই জিঞ্জিরা শিল্পের অভাবনীয় বিস্তার। অনর্গল ইঞ্জিনের ঢস ঢস, গড় গড় শব্দ, কারিগরের সদাব্যস্ত হাঁকাহাঁকি, শ্রমিকদের কোলাহল-আওয়াজ ঘুচিয়ে দিয়েছে সেখানকার রাত-দিনের ব্যবধান। গোটা এলাকায় চলছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। গড়ে উঠেছে দুই হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্প-কারখানা। ১২ লাখ কারিগর-শ্রমিকের উদয়াস্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠছে সম্ভাবনার আরেক বাংলাদেশ। সুই, ব্লেড, আলপিন, নাটবল্টু, রেল-বিমানের যন্ত্রাংশ, ফ্লাস্ক, মোবাইল ফোনসেট থেকে শুরু করে সমুদ্রগামী জাহাজ পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে এখানে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মালামাল তৈরি করছেন লেখাপড়া না জানা ‘ইঞ্জিনিয়ার’রা। কথিত আছে, বছরের পর বছর গবেষণা শেষে জাপান, কোরিয়া, চীন যেসব সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে, সেসব জিনিস এক নজর পরখ করেই হুবহু তৈরি হতে থাকে জিঞ্জিরায়। সেখানকার অভাবনীয় মেধার খুদে কারিগরদের দক্ষতা বিশ্বকে অবাক করে দেয়। উদ্যোক্তারা জানালেন, সরকারি অনুমোদন ও পুঁজি সহায়তা পেলে জিঞ্জিরার কারিগররা অত্যাধুনিক ড্রোন-রোবটও প্রস্তুত করে দিতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে জিঞ্জিরাকেন্দ্রিক খুদে কারখানাগুলো থেকে বছরে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। উৎপাদিত অনেক পণ্যই দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। জিঞ্জিরাকে অনুসরণ করে দেশজুড়ে এ রকম ৪০ হাজারেরও বেশি শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি (বাইশিমাস) সূত্র জানায়, দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের হালকা প্রকৌশল শিল্পে বছরে টার্নওভার ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ও হচ্ছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ছয় লাখ কর্মীসহ পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে ৬০ লাখ লোকের জীবন-জীবিকা।

বিস্তার ঘটছে জিঞ্জিরা শিল্পের : শিল্প-কারখানার মালিকরা জানান, গত দুই দশকে ‘জিঞ্জিরা শিল্প’ অগ্রসর হয়েছে অনেক দূর। এখন আর তা জিঞ্জিরা-কেরানীগঞ্জে সীমাবদ্ধ নেই, সম্প্রসারিত হয়েছে রাজধানীর আনাচেকানাচে, দেশজুড়ে। রাজধানীর মীরহাজিরবাগ, মাতুয়াইল, ডেমরা, চকবাজার-লালবাগ, ইসলামবাগসহ মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে জিঞ্জিরা শিল্পের আদলে অসংখ্য ক্ষুদ্র কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। বসতবাড়ির দু-একটি কক্ষ ব্যবহার করেই উৎপাদনমুখী নানা কাজে ব্যস্ত থাকছেন খুদে উদ্যোক্তারা। যার তেমন একটা পুঁজি নেই তিনি নিদেনপক্ষে একটা বোতাম কারখানা দিয়ে বসেছেন। না হয় বসতঘরেই ফ্যানের কয়েল বাঁধার কাজে জড়িয়ে থাকছেন। শুধু ঢাকায়ই নয়, জিঞ্জিরা মডেল অনুসরণ করে নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, চট্টগ্রাম, যশোরের নওয়াপাড়া, টঙ্গী-গাজীপুর, পাবনা, নাটোর, রাজশাহী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট। সেসব কারখানায় শুধু পণ্যই উৎপাদিত হচ্ছে না, উৎপাদনকারী মেশিনারিজ বানিয়ে তা সরবরাহ করা হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে। স্থানীয় যন্ত্রাংশের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও ক্ষুদ্র এ শিল্পে সরকারিভাবে উল্লেখযোগ্য কোনো সহযোগিতা নেই বললেই চলে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এগিয়ে নিচ্ছেন সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে। জাহাজভাঙা-স্ক্র্যাপ, বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, রোলিং মিল, নির্মাণাধীন স্থাপনার পরিত্যক্ত লোহা ও শিট সংগ্রহ করে সেগুলো থেকেই তাক লাগানো নানা যন্ত্রপাতি তৈরি করছেন হাতুড়ে কারিগররা। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গবেষণাতথ্যে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য বিশ্ববাজারে ঢুকতে পারছে। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলো বাইসাইকেল, তৈরি পোশাক কারখানার যন্ত্রাংশ—যেমন বয়লার মেশিন, ওয়ার্কিং প্লান্ট; ইউপিএস, ব্যাটারি, ভোল্টেজ স্টাবিলাইজার, নির্মাণসামগ্রী, স্যানিটারি ফিটিংস, সামুদ্রিক ও সি-ট্রলারের যন্ত্রাংশ, ব্যাটারির চার্জার ইত্যাদি। কাগজ ও সিমেন্টের অনেক যন্ত্রাংশ কানাডা, কুয়েত, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে রপ্তানি হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

কৃষি যন্ত্রাংশ প্রস্তুতে নীরব বিপ্লব : উত্তরাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র বগুড়ায় কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ঘটে গেছে নীরব বিপ্লব। বিসিক শিল্পনগরীসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির সাত শতাধিক কল-কারখানা। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এসব কল-কারখানায় প্রতিবছর দেড় হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি উৎপাদন করে জাতীয় অর্থনীতিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করছে। স্থানীয় কৃষকদের চাহিদা মেটানো এসব কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিবেশী ভারতসহ অন্যান্য দেশেও ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে রপ্তানি পর্যন্ত করা হচ্ছে। এসব কারখানায় তৈরি যন্ত্রাংশের মধ্যে রয়েছে পানির পাম্প, টিউবওয়েল, শ্যালো ইঞ্জিনের লাইনার, পিস্টন, পাওয়ার টিলার, ধান ও ভুট্টা মাড়াই মেশিনসহ সব কৃষি উপকরণ। এ ছাড়া প্লানার, ক্রাংক শ্যাফট্ গ্রানডিং, মিলিং, সেপার, বোরিং মেশিন, লেদ মেশিন, স’ মেশিন ইত্যাদি তৈরি হয়। বগুড়ার বিসিক, গোহাইল রোড, স্টেশন রোড, রেলওয়ে মার্কেট, সান্তাহারসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানাগুলোর উৎপাদিত যন্ত্রাংশ আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যেতে হলে দরকার পাম্প টেস্টিং সেন্টার, হিট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, মডেল ওয়ার্কশপ নির্মাণ। কিন্তু সেদিকে কারও যেন ভ্রুক্ষেপ নেই। এ শিল্পে সরাসরি প্রায় এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভাঙা জাহাজের লোহা-লক্কড়সহ পরিত্যক্ত লোহা হচ্ছে এসব যন্ত্রাংশ তৈরির কাঁচামাল। বগুড়া শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন এলাকা ও বিসিক শিল্পনগরীতে রয়েছে ছোট-বড় প্রায় এক হাজার কল-কারখানা ও ঢালাই ফ্যাক্টরি। কল-কারখানাতে দিন-রাত তৈরি হচ্ছে কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। বগুড়ায় তৈরি কৃষি সরঞ্জামাদির মধ্যে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, লাইনার, পিস্টনসহ ডিজেল ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ গাড়ির ছোট-বড় যন্ত্রাংশ, সাইকেল-রিকশার পার্টস, পুরনো ও জাহাজভাঙা লোহা গলিয়ে নতুন মেশিনারি ও যন্ত্রাংশ সারা দেশে বাজার সৃষ্টি করেছে। কর্মসংস্থান হয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষের। এসবের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে শিশুপার্কের বিভিন্ন রাইডস। বগুড়ার কারখানায় তৈরি এসব পণ্যের দেশে-বিদেশে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বগুড়ায় উৎপাদিত সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প ইতিমধ্যে ভারত, নেপাল, ভুটানে রপ্তানি হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে বগুড়ার যন্ত্রাংশের একটি ভালো বাজার তৈরি হয়েছে। বগুড়ায় তৈরি কৃষি যন্ত্রপাতি দেশের ৮০ ভাগ চাহিদা পূরণ করলেও পর্যাপ্ত সহায়তার অভাবে এর বিকাশ থমকে আছে। অনুদান ও সরকারি সহযোগিতার অভাবে ক্ষুদ্র কল-কারখানায় উৎপাদিত পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সহায়তার পরিবর্তে নানা রকম জুলুমবাজি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। সরকার কৃষি খাতে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিলেও কৃষিকাজে ব্যবহূত যন্ত্রাংশ তৈরিতে কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। এ শিল্পে ব্যবহূত কাঁচামালের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স চাপানো হয়েছে কড়াকড়িভাবে। ফাউন্ড্রি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আইনুল হক সোহেল জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর উত্তরাঞ্চলের কৃষিশিল্পের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, এত বছরেও সে সম্ভাবনা কাজে লাগানো যায়নি। বগুড়া চেম্বার সভাপতি মমতাজ উদ্দিন জানিয়েছেন, গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পে বিনিয়োগ বাস্তবায়নও পিছিয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের জটিলতায় উত্তরাঞ্চলের শিল্পবিকাশ রীতিমতো আটকে আছে।

রপ্তানিতেও পিছিয়ে নেই : বাংলাদেশে বাইসাইকেল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। বিশ্বের ১০টি প্রথম সারির উৎপাদকের সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করা যায়। ২০১৩-১৪ সালে বাইসাইকেল রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ১০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আধুনিক মানের সাইকেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে পুঁজি সংকটই প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা বা ব্যাংক ঋণ কোনোটাই জুটছে না তাদের ভাগ্যে। কেরানীগঞ্জের তাওয়াপট্টি এলাকার ক্ষুদ্র কারখানার মালিক মোজাম্মেল হক বলেন, সেখানে তৈরি হচ্ছে গিয়ার বক্স, বেলপুনি, পিনিয়ামসহ সম্পূর্ণ লেদ মেশিন, টেক্সটাইল মিলের প্লেট, হুইল, সিমেন্ট কারখানার মিডিয়া বল, স্লিপ, বাস-ট্রাকের গিয়ার বক্স, প্রেশার প্লেট এবং রিকশা-সাইকেলের সব যন্ত্রাংশ। ৩৫-৩৬ লাখ টাকা দামের হোফার মেশিন, ৪০ লাখ টাকার সেফার মেশিন, ৬ থেকে ১৪ ফুটের লেদ মেশিন, ড্রিল ও গ্রেননিং মেশিনসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি পুরোপুরি দেশি প্রযুক্তিতে এখন প্রায় অর্ধেক দামে প্রস্তুত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে খুদে কারিগররা সামুদ্রিক জাহাজের অতি মূল্যবান পিনিয়ামও তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছেন। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু দেশের আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে আনতে ক্ষুদ্রশিল্পের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্বের যেসব দেশে শিল্পবিপ্লব হয়েছে, তারা মূলত আগে থেকে ক্ষুদ্রশিল্পকে প্রাধান্য দিয়েছিল। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও দেশের ক্ষুদ্রশিল্প বিকাশে সব ধরনের সহায়তা করব।’ রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ, কৃষিসামগ্রী, নির্মাণসামগ্রী, বাইসাইকেল ও স্টিলের আসবাবপত্র তৈরিতে যেসব সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা শিগগিরই দূর করার যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন শিল্পমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর