রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বপ্ন জয়ের ধারাবাহিক কাব্য

মেজবাহ্-উল-হক

স্বপ্ন জয়ের ধারাবাহিক কাব্য

সেঞ্চুরির পর গতকাল তামিমের উদযাপন —রোহেত রাজীব

এই তো সেই বাংলাদেশ! এই তো সেই টাইগার! যাদের গর্জনে কাঁপে ক্রিকেট বিশ্ব! দীর্ঘ বিরতির পর ওয়ানডে খেলতে নেমে প্রথম দুই ম্যাচে সুবিধা করতে না পারলেও শেষ ম্যাচে ছন্দে ফিরল মাশরাফিরা। আফগানদের উড়িয়ে দিয়ে ২-১-এ সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। গতকাল একসঙ্গে দুটি মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০০ নম্বর জয়ের সঙ্গে ঘরের মাঠে টানা ষষ্ঠ ওয়ানডে সিরিজ জয়। কি ব্যাটিং, কি বোলিং, কি ফিল্ডিং— আফগানরা বুঝে গেল তাদের সঙ্গে মাশরাফিদের পার্থক্য। প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল যে আফগানরা গতকাল শেষ ম্যাচে তারা যেন স্বপ্নভঙ্গের বেদনা প্রকাশ করার সুযোগও পেল না। ১৪১ রানের ব্যবধানে হারের পর আফসোসের কিছু আছে! গতকাল বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করে তামিমের সেঞ্চুরিতে করে ২৭৯ রান। তারপর বোলিংয়ে আফগানদের আটকে দিল মাত্র ১৩৮ রানেই। তামিম ১১৮ বলে খেলেছেন ১১৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। এটি ড্যাসিং ওপেনারের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সপ্তম শতক। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান এখন তামিম। গতকাল ২ ছক্কা ও ১০ বাউন্ডারি সাজানো নান্দনিক ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন। প্রথম ম্যাচেও ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন তামিম। তিন ম্যাচ মিলে ২১৮ রান। তাই সিরিজ-সেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতেই। গতকাল দারুণ একটা হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সাব্বির রহমানও। ৬৫ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম-সাব্বির মিলে করেন ১৪০ রান। এ জুটিতেই বড় স্কোর করে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের দেওয়া বড় পুঁজি কাজে লাগিয়ে জ্বলে ওঠেন বোলাররাও। তারা কাল আফগান ব্যাটসম্যানদের গুঁড়িয়ে দেন মাত্র ৩৩.৫ ওভারেই। আট বছর পর ওয়ানডেতে ফিরে স্পিনার মোশাররফ হোসেন ২৪ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট পরাশক্তির বিরুদ্ধে টানা সিরিজ জেতা বাংলাদেশ আগের ম্যাচে আফগানদের কাছে হেরে গিয়ে যেন বোকা বনে গিয়েছিল। গতকাল সফরকারীদের উড়িয়ে দিয়ে নিজের সামর্থ্য বুঝিয়ে দিল নতুন করে

দুই মাইলস্টোন যেন টাইগার ক্যাপ্টেন মাশরাফির মুকুটে নতুন দুটি পালক যুক্ত করল। তা ছাড়া অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি অন্যদের ছাপিয়ে গেছেন আগেই। গতকাল উঠলেন নতুন উচ্চতায়। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছে হাবিবুল বাশার সুমনের নেতৃত্বে। ৬৯ ম্যাচের মধ্যে ২৯টি জয়। সাকিবের নেতৃত্বে ৪৯ ম্যাচের মধ্যে ২৪ জয়। আর মাশরাফির নেতৃত্বে ৩১ ম্যাচের মধ্যে ২২তম জয়। জয়ের শতকরা হার ৭১ ভাগ। শুধু তাই নয়, মাশরাফির নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো আইসিসির র্যাংকিংয়ে ৭ নম্বরে ওঠে টাইগাররা। তবে মাইলফলক স্পর্শ করে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে সামনে ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে ভাবছেন অধিনায়ক। মাশরাফি বলেন, ‘সিরিজ জিততে পেরে ভালো লাগছে। তবে আমাদের সামনে বড় সিরিজ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ওই সিরিজে ভালো করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর