সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মন্ত্রী-এমপিরাই হাইব্রিডদের আশ্রয়দাতা

—ওমর ফারুক চৌধুরী

রফিকুল ইসলাম রনি

মন্ত্রী-এমপিরাই হাইব্রিডদের আশ্রয়দাতা

এমপি-মন্ত্রীরা হাইব্রিডদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা এবং উৎপাদনের কারখানা বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর

ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সংগঠন ও এমপি-মন্ত্রী এক জিনিস নয়। নির্বাচন যেহেতু একটি ‘কৌশল’ সে কারণে কিছু রাজনীতিককে মনোনয়ন দেওয়া হয়। আর এদের কিছু কিছু এমপি নিজেদের দল-ভারী করতে সংগঠনের ত্যাগী, পরীক্ষিত  নেতা-কর্মী বাদ দিয়ে ‘নব্য লীগ’ বা ‘এমপি লীগ’ তৈরি করেন। হাইব্রিডদের দিয়ে এলাকা চালান। দলের দুর্দিনের নেতা-কর্মীরা উপেক্ষিত থাকেন। আর ব্যতিক্রম হচ্ছে, সংগঠন। সংগঠনের কাজ হচ্ছে দলের আদর্শ বাস্তবায়ন। জনমত সৃষ্টি করা। কাজেই যারা দল করে তারা হাইব্রিডকে কোনোভাবেই চারপাশে ভিড়তে দেয় না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে কেমন নেতৃত্ব দেখতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের ভেতরে এখনো গণতান্ত্রিক চর্চা বিদ্যমান। কাজেই কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন দলীয় সভাপতি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মূল চালিকার দায়িত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। যিনি এ মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে প্রাজ্ঞ, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, মানবিক এবং জনকল্যাণমুখী নেতা। তার অনন্য নেতৃত্বগুণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে ‘রোল মডেল’। বিশ্বের বিস্ময়। কাজেই আগামী জাতীয় নির্বাচন, আন্দোলন—সবকিছু মাথায় রেখেই দলীয় সভাপতি সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। তবে যারা বিগত দিনে নেতৃত্বের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন, আনুগত্য এবং দলের দুর্দিনে কাজ করেছেন, রাজপথে সক্রিয় থেকেছেন তারাই আসবেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে—এমনটি প্রত্যাশা। নতুন নির্বাচন দিতে হবে—বিএনপি নেতাদের এমন দাবি প্রসঙ্গে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২০১৯ সালে নির্বাচন হবে। এর আগে কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে? প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে বিএনপি নেত্রীকে ডেকেছিলেন। তিনি সাড়া দেননি। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে নির্বাচন থেকে দূরে ছিলেন। এখন ভুল করেছেন। তার খেসারত দিতে হবে। আন্দোলন আন্দোলন খেলা বন্ধ করে, অতীতে মানুষ হত্যা ও অপকর্মের জন্য বিএনপিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, সংবিধানে যে নিদের্শনা রয়েছে সে অনুযায়ীই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তবে এটা ঠিক, বিএনপির মতো আজিজ মার্কা কমিশন গঠন হবে না। একটা স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য কমিশন গঠন করবে সরকার। যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রসঙ্গে সংগঠনের চেয়ারম্যান বলেন, সংগঠন মানে আন্দোলন ও কর্মসূচি। আমাদের দল এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে। রাজপথে শক্তিশালী বিরোধী দলও নেই। কাজেই আন্দোলন মোকাবিলা নিয়ে আমাদের থাকতে হচ্ছে না। তাই আমরা সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হচ্ছি। যেগুলো কেউ কখনো ভাবেনি। একটি রাজনৈতিক সংগঠনের যে প্রকাশনা ও গবেষণা থাকতে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করছি। তিনি বলেন, বর্তমানকে সমৃদ্ধ করে ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা আমাকে শিখিয়েছেন, বুঝিয়েছেন, একটি রাজনৈতিক সংগঠনের তিনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ—গবেষণা, গ্রন্থনা ও অনুবাদ। আজ বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী সারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হচ্ছে। ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দর্শন’ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম’সহ ইতিমধ্যে আমরা সহস্রাধিক বই প্রকাশ করেছি।

সর্বশেষ খবর