শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
অপরাধীকে শাস্তি পেতেই হবে

ভারত-পাকিস্তানকে সংযত হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাশ্মীরে সেনা ঘাঁটিতে হামলা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার মধ্যে পরমাণু শক্তিধর এ দুই প্রতিবেশী দেশকে সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতীয় সংসদে দ্বাদশ অধিবেশনে সংসদ নেতার সমাপনী ভাষণে এ আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুটি দেশকেই আমরা আহ্বান জানাই, তারা যেন সংযত আচরণ করে, এমন কোনো  উত্তেজনা যেন সৃষ্টি না হয় যাতে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কষ্ট হয়। আমরা চাই, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় থাকুক। দক্ষিণ এশিয়ায় কোনোরকম সংঘাত হোক, কোনোরকম উত্তেজনা হোক, তা আমরা কখনই চাই না। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের সংঘাত সৃষ্টি হলে তাতে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

দল দেখি না, অপরাধীকে শাস্তি পেতেই হবে : সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজাকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু পত্রিকা ও কিছু লোক এটাকে দলীয় হিসেবে প্রচার করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা বলেন, দলীয় হিসেবে আমরা তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছি না। যারাই অপরাধী, যেই অপরাধ করুক সে শাস্তি পাবেই। তাকে শাস্তি পেতেই হবে। তিনি বলেন, এখানে কোনো দলীয় কোন্দল ছিল না বা দল হিসেবে কেউ মারতে যায়নি। কেন মারতে গেছে সেটা তো পত্রিকায় এসেছে। সে প্রেম নিবেদন করেছিল, মেয়েটি প্রত্যাখ্যান করেছে, সেজন্য তাকে হত্যা করতে গেছে। শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, সেজন্য কি একটা মানুষকে হত্যা করতে হবে? তিনি দুঃখ করে বলেন, অনেকে এ মর্মান্তিক ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করেছে, কিন্তু কেউ মেয়েটিকে রক্ষা করতে যায়নি। কেন এই মানবিক মূল্যবোধগুলো হারিয়ে গেল! কেন কেউ সেখানে গেল না— সেটাই আমার প্রশ্ন।

এ ঘটনার ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার প্রশ্ন তারা যখন জীবন্ত মানুষের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারল তখনকার সে কথা কি ভুলে গেছে? আমি যদি বলি, এভাবে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করাটা বিএনপি-জামায়াতই শিখিয়েছে। এরাই পথ দেখিয়েছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। কাজেই যারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি হচ্ছে এবং হবে। তিনি অভিভাবকদের আহ্বান জানান, তারা যেন তাদের ছেলেমেয়েদের খোঁজখবর রাখেন। শিক্ষকরা যেন তাদের ছাত্ররা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে সব খোঁজখবর রাখেন। তিনি মসজিদের ইমামদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, সন্ত্রাসের ধর্ম নয়, জঙ্গিবাদের ধর্ম নয়, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ করতে ইসলাম কখনো বলেনি। যারা ধর্মের নাম নিয়ে মানুষ খুন করছে তারা আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামকেইে হেয় করছে। ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা মুসলমানের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ডিজিটাল খাতে উন্নয়নের জন্য তার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহায়তা ও অবদানের কথা তুলে ধরেন। বলেন, বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল দেশে পরিণত হয়েছে। এরই ফলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা সফরের সময় সেখানে বসে ৫১টি জরুরি ফাইল নিষ্পত্তি করে আবার সেগুলো দেশে পাঠিয়ে দিতে পেরেছেন।

সর্বশেষ খবর