শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রত্যাশা প্রাপ্তির সমীকরণ মেলানোই চ্যালেঞ্জ

জাহাঙ্গীর আলম

প্রত্যাশা প্রাপ্তির সমীকরণ মেলানোই চ্যালেঞ্জ

সাবের হোসেন চৌধুরী

 

ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের সময়ে গত কয়েক বছরে দেশের প্রতিটি উন্নয়ন সূচকে এক ধরনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়ছে এবং তাদের জীবন-মান উন্নত হচ্ছে। এ কারণে মানুষের প্রত্যাশা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এই প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণ মেলানোই আওয়ামী লীগ ও সরকারের  সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলের কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সাবের হোসেন চৌধুরী এসব কথা বলেন। ২০১৪ সালে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে প্রথমে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) চেয়ারপারসন এবং জেনেভায় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী আইপিইউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পৃথিবীর ১৭০টি দেশের পার্লামেন্টের ৪৫ হাজার সদস্য ৬৫০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এই আইপিইউ। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি আইপিইউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আইপিইউ নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আগামী বছরটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘে নতুন মহাসচিব নির্বাচিত হবেন। টেকসই উন্নয়নে নানা চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রেও আগামী বছরটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলের পর যে নতুন নেতৃত্ব আসবে, তাদের সামনে  বেশকিছু সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আইপিইউ প্রেসিডেন্ট বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি), ভারতের কংগ্রেস পার্টি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি লক্ষ্যণীয় মিল রয়েছে। এই তিনটি দলই তাদের স্ব স্ব দেশের  স্বাধীনতাযুদ্ধ ও সংগ্রামের সফল নেতৃত্ব দিয়েছে। একইভাবে তিনটি দলেরই চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কীভাবে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে সাজানো যায়। তিনি বলেন, ‘দেশকে স্বাধীন করা এবং স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি নাগরিকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার মধ্যেও চ্যালেঞ্জ আছে। আমরা লক্ষ্য করছি, ভারতের কংগ্রেস এবং এএনসি বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।’

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগও স্বাধীনতা নেতৃত্বদানকারী দল থেকে এখন বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে রূপান্তরিত হচ্ছে। মানুষের কাছাকাছি কীভাবে আরও পৌঁছানো যায়, মানুষের অবস্থা কীভাবে আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়, এটি সব রাজনৈতিক দলের জন্যই সাধারণ চ্যালেঞ্জ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানের দুঃখজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেপ্টেম্বরের নির্ধারিত সিপিএ সম্মেলন সঙ্গত কারণেই স্থগিত করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। বর্তমান সরকারের জঙ্গিবাদবিরোধী প্রশংসিত নানা পদক্ষেপের কারণে আমরা আশাবাদী যে আগামী বছর এপ্রিল মাসে ঢাকায় প্রথমবারের মতো আইপিইউর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, এ সম্মেলন হবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আয়োজন। এ মাসের শেষে জেনেভায় আইপিইউ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হবে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, সম্মেলনে ১৩৫ থেকে ১৪০টি পার্লামেন্টের প্রতিনিধি অংশ নেবেন। প্রায় ১০০টি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সে দেশের স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকাররা। সাবের চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণ সভায় বিশ্বের নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে পার্লামেন্ট মেম্বাররা আলোচনা করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে। তা ছাড়া সম্মেলনে বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরার একটি অসাধারণ সুযোগ থাকবে। আমি আশাবাদী, এ সুযোগের পরিপূর্ণ ব্যবহার বাংলাদেশ করতে পারবে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি সাবের চৌধুরী বলেন, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। এটা অনেক বড় স্বস্তির বিষয় যে, আমরা নিরাপত্তাসংক্রান্ত সব সন্দেহ দূর করতে পেরেছি। আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রথম দুটি ম্যাচ  বাংলাদেশ তার স্বাভাবিক ধারার পরিচয় দিতে না পারলেও তৃতীয় ম্যাচটি তাদের শক্তির পরিচয় দিয়েছে। আমরা আশাবাদী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব এবং দেশের মানুষের আবারও দেশ নিয়ে গর্ব করার একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে।

 

সর্বশেষ খবর