রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না

--------প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। ধর্মের নামে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এখানে জঙ্গিবাদের  জায়গা নেই। বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের জন্য। গতকাল বিকালে রাজধানীর লালবাগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা পরিদর্শন শেষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে ঢাকেশ্বরীতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। পরে মন্দির প্রাঙ্গণে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেন। বিকাল ৪টা ৮ মিনিটে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মণ্ডপ পরিদর্শনে করেন প্র্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে মিশনের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে যার যার ধর্ম সে স্বাধীনভাবে পালন করবে, এই পরিবেশটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আসুন, সবাই মিলে একসঙ্গে দেশকে গড়ে তুলি। আমরা দেশকে এভাবেই পরিচালিত করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সংঘাত চাই না। শান্তি চাই, সম্প্রীতি চাই। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার উন্নতি চাই। সে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের পথচলা।’ তিনি বলেন, প্রতিটি ধর্ম-বর্ণের মানুষ এক হয়ে যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছে। সবার রক্ত, লাখো শহীদের রক্ত একাকার হয়ে মিশে গেছে। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা স্মরণ করে বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল সব ধর্মের মানুষ তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। সবাই মিলেমিশে এ দেশে বাস করবে। বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ ও দারিদ্র্যমুক্ত—এ লক্ষ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ কাজ করে। সে জন্য আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ উন্নত হয়। পবিত্র কোরআনের সূরা কাফিরুনের একটি আয়াত উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, ইসলামে বলা আছে, যার যার ধর্ম তার কাছে। সব ধর্মের মূলেই মানবতা। এটা সবাইকে মেনে চলতে হবে যে, বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের জন্য।

মন্দিরে পড়ে যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত : ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা অর্চনার সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছেই গালিচায় (কার্পেটে) হোঁচট খেয়ে পড়ে যান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রবীণ সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এ সময় তার কপাল দিয়ে রক্ত বের হতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে প্রধানমন্ত্রীর বহরে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় তার ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল ইসলাম জানান, তিনি সামান্য আঘাত পেয়েছেন। তাকে রাতেই বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।

রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন :  প্রধানমন্ত্রী রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শনকালে মিশনের  ছাত্রাবাসের স্মরণিকা ‘জ্ঞানাঞ্জন’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। রামকৃষ্ণ মিশনে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বড় সম্পদ হলো ভ্রাতৃত্ববোধ। যে কোনো উৎসবে এ দেশের সবাই একসঙ্গে শামিল হয়, উৎসব পালন করে। ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতারা ছিলেন।

সর্বশেষ খবর