বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কঠোর নিরাপত্তায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ঘিরে রাজধানী ও এর আশপাশে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে এরই মধ্যে ঢেকে দেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে। উদ্যানের আশপাশে বসানো হয়েছে একাধিক চেকপোস্ট। পোশাকে-সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পল্টন, হাইকোর্ট এবং রমনা এলাকায়। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ওই সময় সম্মেলনে আসা অতিথি ও আমন্ত্রিতদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা পরখ করতে গতকাল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া কাউকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে কাউন্সিলে কোনো প্রকার ব্যাগ, ধারালো অস্ত্র বা দাহ্য পদার্থ নিয়ে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্রও। ডিএমপি কমিশনার বলেন, সম্মেলন উপলক্ষে মঞ্চ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তার পুরো দায়িত্বভার গ্রহণ করবে ডিএমপি। সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ওই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকব। এ সময় সোয়াট, র‌্যাব, গোয়েন্দা পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা সমন্বয় করা হবে। তিনি জানান, ওই সম্মেলনের কাউন্সিলর ও অতিথিদের নির্বিঘ্নে আসা-যাওয়ার জন্য শাহবাগসহ আশপাশের বেশকিছু সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এজন্য বেশকিছু সড়কে ডাইভারশন করা হবে বলেও জানান তিনি। ওই সময়ে ট্রাফিকব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী শনি ও রবিবার নগরীর বেশকিছু এলাকায় ডাইভারশন করা হবে এবং মাইক দিয়ে তা নাগরিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে। জানা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় দুই শতাধিক সিসিটিভি স্থাপন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য র‌্যাব ও ডিএমপির পক্ষ থেকে দুটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য ওই এলাকায় মোতায়েনকৃত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সঙ্গে সমন্বয় করেই র‌্যাব-পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সম্মেলনের ডেলিগেটস, কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিদের চলাচলে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য আগামী শনিবার থেকে সম্মেলন এলাকার আশপাশে ভবঘুরে, হকার ও সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।

শুধু আমন্ত্রিত অতিথি ও দলের পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরাই সম্মেলন এলাকায় প্রবেশের অনুমতি পাবেন। বিকাল ৫টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘুরে দেখেন উদ্যানের বিভিন্ন পয়েন্ট। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি বলেন, কাউন্সিলে বড় জমায়েত হবে। প্রচুর লোকের সমাগম ঘটবে। এজন্য সব ধরনের আশঙ্কা মাথায় রেখেই সম্মেলনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যসব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেই র‌্যাব সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। তিনি আরও বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যানের প্রতিটি গেটে র‌্যাব সদস্যরা টহলে থাকবেন। সম্মেলন শুরুর আগেই প্রয়োজন অনুযায়ী ডগ স্কোয়াড দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশ সুইপিং করানো হবে। তবে সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স।

সর্বশেষ খবর