শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাল জমকালো সম্মেলন

দেশজুড়ে আলোকসজ্জা লেজার শোসহ থাকছে আরও অনেক কিছু

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাল জমকালো সম্মেলন

জমকালো আয়োজন। চোখ ধাঁধানোও বটে। বিশাল নৌকা আকৃতির মঞ্চ। রাজধানীসহ দেশজুড়ে আলোকসজ্জা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, লেজার শো-আরও কত কিছু!

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন বলে কথা। তাই আয়োজনটা একটু বেশিই। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাল থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সম্মেলনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে উত্তাল সমুদ্রে ভাসমান নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ। ভূমি থেকে প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন মঞ্চটি দুর্বার ভঙ্গিতে দণ্ডায়মান। মঞ্চের প্রথম সারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের আসন। দ্বিতীয় সারিতে বসবেন ৫৮ জন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সব সদস্যের জন্য মঞ্চে আসন রাখা হয়েছে। ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির দুটি পদ ফাঁকা আছে।

মঞ্চের পেছনে ৩৫ ফুট উচ্চতার এলইডি পর্দা স্থাপন করা হচ্ছে। মঞ্চের সামনের দিকে স্বচ্ছ কাচের খুঁটিবিহীন একটি গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে সাত হাজার অতিথির আসন থাকবে। ৪০ হাজারের অধিক মানুষের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্যান্ডেলের কাজ গতকালই শেষ হয়েছে। প্যান্ডেলে প্রত্যেক জেলার জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দলটির দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অংশ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এবারের সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ হয়েছে, ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।’ সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতির চিত্রসহ ভিশন ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে দলের ঘোষণাপত্রে থাকছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, স্মরণকালের জাঁকজমকপূর্ণ হবে এ সম্মেলন। নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ছাড়া সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সম্মেলনে। আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে সারা দেশ থেকে ছয় হাজার ৫৭০ কাউন্সিলর অংশ নেবেন। আর ডেলিগেট অংশ নেবেন এর দ্বিগুণেরও বেশি। সম্মেলনের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সম্মেলনের সাজসজ্জা, আপ্যায়ন, শৃঙ্খলা, বিদেশি মেহমানদের থাকার ব্যবস্থাসহ সব ব্যয় এই বাজেটের মধ্যে করতে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। সম্মেলনের প্রথম দিন ডিজিটাল ডিসপ্লেতে সরকারের সব উন্নয়ন কার্যক্রম দেখানো হবে। দল গঠন থেকে শুরু করে আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমা তুলে ধরা হবে। বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়নসহ রাজনৈতিক ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি প্রবেশপথে এবং সম্মেলনস্থলের চতুর্দিকে একাধিক মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য গতকাল রাত থেকেই মোতায়েন করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় রয়েছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। ডিএমপির পুলিশ ছাড়াও পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), র‌্যাবসহ ডগ স্কোয়াড থাকবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সম্মেলনস্থলে প্রবেশের জন্য সাতটি প্রবেশমুখেই আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর