রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় অধিবেশনে শুধুই জয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বিতীয় অধিবেশনে শুধুই জয়

বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে সম্মানজনক পদে চাইছেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। দলের ২০তম সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় অংশে বিভিন্ন বিভাগীয় ও প্রবাসী নেতাদের বক্তৃতায় এ দাবি উচ্চারিত হয়। তারা বলেছেন, নবীন প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আগামী দিনের নেতা তৈরির লক্ষ্যে অবশ্যই সজীব ওয়াজেদ জয়কে এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মানজনক পদে দেখতে চাই। এমনকি দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দ্বিতীয় অধিবেশনের বক্তৃতায় বলেন, আমাদের ফিউচার লিডার সজীব ওয়াজেদ। তাকে নিয়ে ভাবতে হবে।

কাউন্সিলর সারিতে জয় : সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে। মঞ্চে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা। অধিবেশন সঞ্চালক দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ মাইকে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্মেলনে এসেছেন। রংপুর জেলার কাউন্সিলর হিসেবে অধিবেশনে যোগ দেন জয়। তিনি সম্মেলনস্থলে পৌঁছে কাউন্সিলরদের প্রথম সারিতে বসেন। তখন কাউন্সিলর-ডেলিগেট এবং অন্য নেতা-কর্মীরা একযোগে বলতে থাকেন ‘জয়কে মঞ্চে চাই।’ সবার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক পর্যায়ে মঞ্চে যেতে বাধ্য হন জয়। মঞ্চে যাওয়ার পর মা শেখ হাসিনা তাকে ‘বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র’ বলে পরিচয় করিয়ে দেন। জয় সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে মঞ্চের পেছনের সারিতে বসতে উদ্যত হন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ তাকে পেছনে বসতে দিতে রাজি নন। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জয়কে হাত ধরে তার পাশের আসনে বসার অনুরোধ করেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফও একই অনুরোধ করলে জয় সেখানে বসে পড়েন। কিন্তু বসার আগে তিনি বার বার যুক্তি তুলে ধরেন, এটি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সারি। তিনি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এখানে বসতে পারেন না। জয় বসার পর বিষয়টি সবাইকে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, জয় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সারিতে বসতে চাচ্ছিল না। সে দলের শৃঙ্খলা মনে চলে এবং এটাকে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু সবার অনুরোধে আর যেহেতু বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র তাই তাকে সামনের সারিতেই (প্রেসিডিয়াম সারি) বসতে হয়েছে।

জেলা নেতারা যা বলেন : খুলনা বিভাগের পক্ষে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুনুর রশীদ বলেন, আগামী দিনের নেতা তৈরির লক্ষ্যে অবশ্যই সজীব ওয়াজেদ জয়কে এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মানজনক পদে দেখতে চাই। তিনি বলেন, আমাদের দেশের আরেকজন নেত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে মানি লন্ডারিং করে, বিদেশেও ধরা খায়। জেল হয়। আর আমাদের নেতা সজীব ওয়াজেদ জয়ের এমন অভিযোগ তো দূরের কথা সারা বিশ্বে তার সুনাম। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা পুরস্কার অর্জন করেন। জয় শুধু দেশের তরুণ সমাজের প্রতিনিধিই না, বিশ্বের কোটি কোটি তরুণেরও প্রতিনিধি। কাজেই আগামীতে যে কমিটি আসবে সেখানে তাকে সম্মানজনক অবস্থানে দেখতে চাই। তিনি বলেন, আমি ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। সেখানে সবাই জয়ের প্রশংসা করেছেন। তিনি আইসিটি খাতের পাইওনিয়র। এ সময় তিনি উপস্থিত কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের উদ্দেশে বলেন, কী ভাই আপনারা চান কি না? এ সময় উপস্থিত সবাই হাত তুলে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন। সম্মেলনে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যে ডিজিটাল বিপ্লব হচ্ছে তার রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়। আমরা তাকে নেতৃত্বে দেখতে চাই। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দীন রাজশাহী বিভাগের নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের জন্য কাজ করছেন। তাকে দলীয় নেতৃত্বে আনলে দল ও দেশ উপকৃত হবে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুচ সালাম বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে চাই। তিনি বলেন, মাননীয় নেত্রী আপনার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে আপনার রানিংমেট কে থাকবেন সেটা আপনিই সিদ্ধান্ত নেবেন। বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ধীরেন্দ্র নাথ সম্ভু বলেন, জয়ের দিকে তাকিয়ে আছে সারা বাংলাদেশ। আমরা তাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে চাই।

ঢাকা বিভাগের পক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী ইমদাদুল হক, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকও একই দাবি জানান।

‘শত্রু অন্য কেউ না’ : খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, আওয়ামী লীগের শত্রু অন্য কেউ না। নিজেরাই নিজেদের শত্রু। দলের ভিতরে কোনো সমস্যা হলে সেটা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। তা না করে নিজেরাই নিজেদের সমালোচনা করি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু নিজেরা এগুলো প্রচার করি না। এসব উন্নয়ন প্রচার করা হলে, জনগণের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলে— আগামী আরও ২০ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে।

সর্বশেষ খবর