বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিএনপিতে সিদ্ধান্তহীনতা মারাত্মক ব্যাধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিতে সিদ্ধান্তহীনতা মারাত্মক ব্যাধি

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, সবকিছুতেই বিএনপিতে সিদ্ধান্তহীনতা মারাত্মক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনেক বয়স হয়েছে। নানা কারণে তিনি চিন্তিতও। সবকিছুই তাকে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। দলের অন্য দক্ষ সিনিয়র নেতারা রয়েছেন।

তাদের উচিত হবে, খালেদা জিয়াকে দল পরিচালনায় সহযোগিতা করা। সংগঠনকে গতিশীল করতে নানামুখী তত্পরতা চালানোও জরুরি। অনেক প্রতিকূলতায় ১৯ মার্চ দলের কাউন্সিল হয়। এখনো কেন জেলা-উপজেলা, মহানগর কিংবা অঙ্গ সংগঠনের কমিটি বাকি থাকবে? দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উচিত, চলতি বছরের মধ্যেই দলকে গুছিয়ে নতুন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিএনপি সমর্থিত প্রবীণ এই বুদ্ধিজীবী। তার মতে, কমিটিতে থাকা সব নেতাকেই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। দুর্বল কাউকে কমিটিতেই রাখা উচিত হবে না। যে কোনো পরিস্থিতিতে ডিসেম্বরের মধ্যেই ৭৫টি সাংগঠনিক ইউনিটির কমিটি হওয়া উচিত। মেয়াদোত্তীর্ণ অঙ্গ সংগঠনগুলোও ঝুলিয়ে রাখা ঠিক নয়। কারণ, সুষ্ঠু নির্বাচন এ সরকার দেবে না। সেক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনের প্রস্তুতিও থাকতে হবে বিএনপিতে। অগোছালো দল নিয়ে আন্দোলন হয় না, এটা বিগত সময়ে প্রমাণিত হয়েছে। এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন ডায়নামিক লিডার ছিলেন। নেতৃত্বে তার যেমন দক্ষতা ছিল, সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনাও ছিল। বিএনপি নেতা-কর্মীদের জিয়াকে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণের চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু দলের বিভিন্ন পদে অদক্ষতা বাসা বেঁধে আছে। আমি মনে করি, দলের মহাসচিব মির্জা আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের প্রতিদিনই দলকে নিয়ে বসা উচিত। তারা তো কাচের ঘরে বাস করছেন না। কী ঘটছে, আওয়ামী লীগ কী করছে, তার বিপরীতে কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের এই মুহূর্তে দল গোছানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। যোগ্য নেতাদের যোগ্য স্থানে জায়গা করে দেওয়া উচিত। নির্বাহী কমিটিতে শূন্য পদের পাশাপাশি উপ-কমিটিও ঘোষণা করা উচিত। নেতারা চেয়ারপারসনের নির্দেশ ফলো করছেন কিনা, তাও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য বলেন, বিএনপির সামনে এখনো অনেক কাজ রয়েছে। কমিটি দিতেই যদি দেরি হয়, তাহলে তারা সাধারণ মানুষের কাছে কখন যাবেন? তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরও চাঙ্গা করতে হবে। তাদের মনোভাবকে গুরুত্ব দিয়ে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। আওয়ামী লীগ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েই নির্বাচনে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে। সামনের নির্বাচনের জন্য বিএনপিকেও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, এখনো বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপি। তাদের প্রতি লাখ লাখ নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সমর্থনও রয়েছে। এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, দল নিয়ে নিজেদের মধ্যেও আত্মসমালোচনা করা চাই। ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগোনো উচিত। সমালোচনাকে সহ্য করার মানসিকতাও সবার থাকা জরুরি।

সর্বশেষ খবর