শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে এগোতে হবে

----------এমাজউদ্দীন আহমদ

ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে এগোতে হবে

দল পরিচালনায় কেন্দ্রের হুকুম নয়, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের  মতামতের ভিত্তিতেই বিএনপি পরিচালিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, যত বাধা বিপত্তিই থাকুক, বিএনপিকে তৃণমূলেই ফিরে যেতে হবে। সাধারণ মানুষের আস্থা তৈরি করতে হবে। অতীতের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগোতে হবে।’ ১০ বছরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির উদ্দেশে এ কথা বলেন দলটির অন্যতম প্রধান এই বুদ্ধিজীবী। বিগত ১০ বছরে দলের ভুলত্রুটিগুলোও পর্যালোচনা হওয়া উচিত বলে মনে করেন শত নাগরিক কমিটির এই আহ্বায়ক। তার মতে, ‘রাজনৈতিক দলে ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। তা থেকে শিক্ষা নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। বিএনপিকেও মোটা দাগে ভুলগুলোকে শুধরে নিতে হবে। সরকার বা শক্তিশালী বিরোধী দলে গেলে কী করা উচিত, তা নিয়েও একটি ভিশন থাকা জরুরি। দল নিয়ে নিজেদের মধ্যেও আত্মসমালোচনা করা চাই।’ তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পর বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে পারেনি এটা ঠিক। তবে বিগত ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশব্যাপী আন্দোলন করতে পেরেছে। যদিও ওই আন্দোলনে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। আমি সহিংসতায় বিশ্বাস করি না। বিএনপিকে সামনে সাংগঠনিক শক্তিশালী ভিত তৈরি করতে হবে। একইভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে আন্দোলন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ওপর নানা অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে। গুম, খুন ও দলের নেতা-কর্মীরা নানাভাবে হয়রানি হচ্ছে। এসব ব্যাপারে প্রতিশোধের মানসিকতাও থাকা যাবে না। ভবিষ্যতে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করে যেতে হবে। দলের যে কোনো সংকটে সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে যেতে হবে। আন্তরিকতা দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদের মোটিভেশনও জরুরি। অবশ্যই নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক সব কমিটির কাজ শেষ করতে হবে। শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশ করতে হবে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।’ বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সরকার এরই মধ্যে নেতা-কর্মীদের মাঠে নামার দিক নির্দেশনা দিয়েছে। বিএনপিকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। যেহেতু, বিগত সংসদ নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ, তাই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করবে বলে সরকারের কাছে আমরা প্রত্যাশা করছি। এই ফাঁকে বিএনপির সব সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটিগুলো করে দেওয়া উচিত। দলকে সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা জরুরি।’ এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন স ৎ ও গতিশীল নেতা ছিলেন। নেতৃত্বে তার যেমন দক্ষতা ছিল, সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনাও ছিল। বিএনপি নেতা-কর্মীদের জিয়াকে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণের চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু দলের বিভিন্ন পদে অদক্ষতা বাসা বেঁধে আছে। আমি মনে করি, দলের সিনিয়র নেতাদের প্রতিদিনই দলকে নিয়ে বসা উচিত। তারা তো কাচের ঘরে বাস করছেন না। কী ঘটছে, আওয়ামী লীগ কী করছে, তার বিপরীতে কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের এ মুহূর্তে দল গোছানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। যোগ্য নেতাদের যোগ্য স্থানে জায়গা করে দেওয়াও উচিত। নির্বাহী কমিটিতে শূন্য পদের পাশাপাশি উপকমিটিও ঘোষণা করা উচিত। নেতারা চেয়ারপারসনের নির্দেশ ফলো করছে কি না, তাও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’

সর্বশেষ খবর