শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পিছিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলনে

----------আসিফ নজরুল

পিছিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলনে

দাবি আদায়ে ‘বাধ্যকরণের’  আন্দোলনে বিএনপি পিছিয়ে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে এগিয়ে আওয়ামী লীগ।

১৯৯৬ সালে প্রথমে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। আরেকটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ তখন বিএনপিকে বাধ্য করতে পেরেছিল। কিন্তু গত নির্বাচনে বিএনপি তা পারেনি। ১০ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ভালো-মন্দ নানা দিক নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ মন্তব্য করেন ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘বিএনপি যে ১০ বছর ক্ষমতায় নেই, তার পেছনে দলটির অনেক ভুলত্রুটি আছেই। এগুলো নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। সম্পাদকীয়তে লেখালেখি হয়েছে, সবাই তা জানে। কিন্তু বিএনপি যে ১০ বছর ক্ষমতায় নেই, তার পেছনে রয়েছে আওয়ামী লীগের চালাকি। তারা অপরাজনীতিও করেছে। বিরোধী দলের ওপর আওয়ামী লীগ নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনও ছিল চরম প্রহসনমূলক। গণতন্ত্রের স্বার্থেই এটা নিয়ে আরও বেশি এখন আলোচনা হওয়া উচিত। এতে গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে।’ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘ওই সময় বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, এ জন্য প্রধানত দায়ী আওয়ামী লীগ। মনে রাখতে হবে, ওই নির্বাচন শুধু বিএনপিই বর্জন করেনি, গণফোরাম, সিপিবি, জেএসডিসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই নির্বাচন বয়কট করেছিল। ওই নির্বাচন ছিল প্রসহনের। বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের বড় অংশই হোটেল লেকশো’রে আলোচনা করে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে বলেছিল। কিন্তু সরকার কারও কথাই শোনেনি। তাছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সংস্কৃতি তো আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকতেও করেছিল। বিগত সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ বলেছিল, তারা সবার অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন করবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও সেই ইঙ্গিত ছিল। দুই পক্ষেরই কম-বেশি দোষ রয়েছে বলে আমি মনে করি।’

তিনি বলেন, অনেকেই বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেই ভালো হতো। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বিএনপি দেখা করল না কেন আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন টেলিফোন করে আলোচনায় বসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তাতে বেগম খালেদা জিয়া সাড়া দেননি কেন। এগুলো বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর দেখলে তাদের ওপর দোষ চাপানো খুবই সহজ। তবে আমিও মনে করি, প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা না করা এবং শেখ হাসিনার টেলিফোনের আহ্বানে সাড়া না দেওয়া বিএনপির ভুল সিদ্ধান্ত।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে বিএনপিকে আলোচনায় নেওয়া উচিত। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি বলেছে, সবার মতামতের ভিত্তিতে কমিশন গঠন করতে হবে। আমিও মনে করি, বর্তমান কমিশন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অযোগ্য ও অথর্ব কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের আমলে বিভিন্ন নির্বাচন করেছে। দেশের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের উচিত, দেশের মানুষের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সত্যিকারের একটি নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা।’

সর্বশেষ খবর