রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুলশান হামলার অস্ত্র আসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

গুলশান হামলার অস্ত্র আসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে

গুলশান হামলায় ব্যবহূত অস্ত্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতে কাজ করছে ভারতের গোয়েন্দারা। এনআইএ কর্মকর্তারা  বলছেন, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীরা যে একে-২২ রাইফেল নিয়ে হানা দিয়েছিল, তা পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় বসে তৈরি করা হয়। মালদায় তৈরির পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত হয়ে অস্ত্রগুলো বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল বলে জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে। ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বার্তা সংস্থা টিএনএন’র প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে, এনআইএ’র তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলছেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে জেএমবির যে ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরই একজন গুলশান হামলার অস্ত্র কারখানার তথ্য দিয়েছেন। ওই কারখানার কারিগররা বিহারের মুঙ্গের থেকে এসেছিল, পশ্চিবঙ্গে মালদায় একটি আস্তানায় বসে অস্ত্র বানায় তারা। তবে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল পাকিস্তানের কয়েকজন। তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষায় কথা বলছিল। ওই প্রশিক্ষকরা পশতু ভাষায় কথা বলছিল, তারা এসেছিল পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের দারা আদম খেল থেকে। আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের ওই এলাকাটি সমরাস্ত্র তৈরির জন্য সুপরিচিত। ওই এলাকার কারিগররা অল্প সময়েই যে কোনো আগ্নেয়াস্ত্রের নকল তৈরি করতে পারেন, ওই এলাকায় বাজারে প্রকাশ্যেই অস্ত্র কেনা-বেচা হয়। ভারতের বিহারের মুঙ্গের ছোট ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির জন্য পরিচিত। সেখানে পিস্তল জাতীয় অস্ত্র তৈরি হলেও একে-২২ রাইফেলের মতো অস্ত্র সাধারণত তৈরি হয় না। এ থেকে ভারতের গোয়েন্দারা বলছেন, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানিরাই একে-২২ রাইফেল তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আর এতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশও থাকতে পারে। এদিকে গুলশানে কমান্ডো অভিযানে জঙ্গিরা মারা পড়ার পর একটি ফোল্ডেট বাট একে-২২ রাইফেল এবং চারটি পিস্তল উদ্ধারের কথা জানানো হয়েছিল। এই অস্ত্র ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসেছিল বলে আগেই জানিয়েছেন ঢাকার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তবে সেই অস্ত্র কোথায় তৈরি তখন তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে জেএমবির ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়, তাদের একজন বাংলাদেশের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ‘হোতা’ আনোয়ার হোসেন ফারুক বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর