বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ই-মেইল ইস্যুতে বাজিমাত চান ট্রাম্প

প্রতিদিন ডেস্ক

ই-মেইল ইস্যুতে বাজিমাত চান ট্রাম্প

মার্কিন নির্বাচনের আর সপ্তাহ বাকি নেই। চলছে ঘণ্টার হিসাব। সাকল্যে ১২০ ঘণ্টা। অথচ দেড় বছর ধরে চলা এই নির্বাচনের প্রচারণায় এতদিন পর্যন্ত জনপ্রিয়তার পাল্লা ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের পক্ষেই ভারী ছিল। কিন্তু দিন পাঁচেক আগে এফবিআই প্রধান জেমস কোমির একটা ঘোষণা হিলারির জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়ে দিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। জেমস কোমি ঘোষণা দিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ব্যক্তিগত ই-মেইলে রাষ্ট্রীয় তথ্য দেওয়া-নেওয়া দেওয়া-নেওয়া করেছেন, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ওই ই-মেইলের তদন্ত হবে। আর নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে সেই ইস্যুকে পুঁজি করে বাজিমাত করতে চান রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোমির ওই ঘোষণার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলা নারী নিপীড়নের ইস্যুও হারিয়ে গেছে। ট্রাম্প ই-মেইল ইস্যুকে মার্কিন রাজনীতির ইতিহাসে ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পর সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি আখ্যায়িত করে একে ‘ই-মেইলগেট স্ক্যান্ডাল’ নামে অভিহিত করেছেন। তিনি তার প্রচারণায় শুধুই ই-মেইল ইস্যুকে সামনে আনছেন এবং নিজের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। এদিকে মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম সিএনএন-এর রাজনৈতিক ভাষ্যকার স্যালি কোহন বলেছেন, যেসব ভোটার হিলারিকে দায়ী করে ঘৃণা করছেন তারা মূলত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে করছেন না (হিলারিকে ঘৃণা করার মতো  কোনো তথ্য ভোটারদের হাতে নেই)। তিনি বরং এটাকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা ‘কন্সপিরেসি থিওরি নাম দিয়েছেন। এই শ্রেণির ভোটার মূলত ‘কন্সপিরেসি থিওরি’র শিকার। এদিকে টাইম ম্যাগাজিনে হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল নিয়ে এফবিআইর সর্বশেষ মাতামাতিকে ‘নারীর ওপর আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলের অধ্যাপক রবিন লেকোফ টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন, ‘ই-মেইলগেট ইজ এ বিচ হান্ট। এই অভিযোগ অনেকটা নারীর মধ্যে বেশ্যা খুঁজে ফেরার মতো। কিন্তু এর টার্গেট শুধু হিলারি ক্লিনটন নন, এর টার্গেট আমেরিকার সব নারী।’

এদিকে গত পরশু বিভিন্ন সময়ে নোবেল পুরস্কার পাওয়া অর্থনীতিবিদসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ৩৭০ জন অর্থনীতিবিদ মার্কিন ভোটারদের কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন তারা যেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট না দেন। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, ‘ট্রাম্প মার্কিন অর্থনীতির মূল বিষয়গুলো নিয়ে ভোটারদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন। একই সময় ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে মার্কিন অর্থনীতির গত তিন মাসের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯ ভাগ— যা এর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ২ দশমিক ৬ ভাগ হবে বলে ধারণা করেছিল। বলা হচ্ছে, গত ২ বছরের মধ্যে মার্কিন অর্থনীতি এখন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এর আগে টাইম ম্যাগাজিন হিলারি ক্লিনটনের ই- মেইল নিয়ে এফবিআইর সর্বশেষ মাতামাতিকে ‘নারীর ওপর আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করেছে।

নতুন জরিপে ফ্লোরিডায় হিলারি এগিয়ে : শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় এখন ফ্লোরিডায় ব্যস্ত সময় পার করছেন  ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। আর এরই মধ্য দিয়ে এ অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পেছনে  ফেলেছেন হিলারি। গতকাল এএফপির খবরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এক জাতীয় জরিপের ফলাফলে মঙ্গলবার সকালে আশাবাদী হয়ে ওঠে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবির। কেননা জরিপে ট্রাম্প হিলারির চেয়ে সামান্য এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু কিছু সময় পরই হিলারি ফোর্ট লডারডেল সমাবেশে ভাষণ দিতে দাঁড়ালে পাল্টে যায় সকালের জরিপের দৃশ্য। হিলারি ভাষণে বলেন, ‘আমি কী আর বলব! ট্রাম্প এরই মধ্যে প্রমাণ করেছেন তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য  মেজাজ-মর্জির দিক দিয়ে অনুপযোগী ও অযোগ্য। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান টার্গেটস্মার্টের জরিপে দেখা যায়, হিলারি ফ্লোরিডায় জয়ী হতে পারেন এবং যে কোনো দিক দিয়েই ট্রাম্পকে হারাতে পারেন। কারণ জরিপের ফলাফলে দুজনের মধ্যে ৮ শতাংশ  ভোটের পার্থক্য দেখা গেছে। সেখানে হিলারির প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪৮ শতাংশ আর ট্রাম্পের প্রতি ৪০ শতাংশ মানুষের সমর্থন। কলেজ অব উইলিয়াম অ্যান্ড ম্যারি এই জরিপ পরিচালনা করতে গিয়ে যারা ইতিমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে নমুনা হিসেবে নিয়েছেন।

৩০ বছর ধরে নারীদের পেছনে লেগে আছেন ট্রাম্প : নারী  ভোটারদের কাছে টানতে আবারও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নারীর প্রতি সহিংসতার অভিযোগ তুললেন হিলারি। গত ৩০ বছরে তার ভূমিকা বিশ্লেষণ করে হিলারি দাবি করেছেন, নারী-নিপীড়ন, নারীকে অবমাননা ও অপমানের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের সুদীর্ঘ ৩০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। মঙ্গলবার ফ্লোরিডায় আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশের মঞ্চে সেই আলিসিয়াকে নিয়ে হাজির হন হিলারি। সমাবেশে ট্রাম্পকে ‘নৃশংস’ বলে উল্লেখ করেন আলিসিয়া। তিনি জানান, ট্রাম্পের মন্তব্যের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সিএনএন, এএফপি, বিবিসি, পলিটিকো

সর্বশেষ খবর