বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাহুল গান্ধী আটক পরে মুক্ত

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

রাহুল গান্ধী আটক পরে মুক্ত

উরি কাণ্ডের পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ঘটনা সামনে নিয়ে এসে যখন দেশে জাতীয়তাবাদের হাওয়া বওয়াতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তখন তা প্রবল ধাক্কা খেল। বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন সত্তরোর্ধ্ব এক সাবেক সেনাকর্মী। গতকাল সকালে নয়াদিল্লির যন্তরমন্তরে আত্মহত্যা করেন তিনি। হরিয়ানার বাসিন্দা সাবেক এই সেনাকর্মীর নাম রাম কিষান গ্রেওয়াল। তার দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট থেকে জানা  গেছে, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘এক পদ এক পেনশন’ প্রকল্প চালু হতে দেরি হওয়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনীতি। ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব। এদিন দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে মৃতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী। কিন্তু তাকে হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তিনি জানান, সাবেক সেনাকর্মীর এভাবে মৃত্যু এবং এরপর তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। তার কথায়, ‘এই হচ্ছে মোদির ভারত, যেখানে সাবেক সেনাকর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না।’ হাসপাতালের নিয়ম ভেঙে ঢুকতে চাওয়ার অপরাধে রাহুলকে কিছুক্ষণের জন্য আটকও করা হয়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে তাকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে এ ঘটনার পরই সরব হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কেন্দ্রের ব্যর্থতার দাবি তুলে তিনি মোদি সরকারকে আক্রমণ করেন। টুইটে কেজরিওয়াল লিখেন, ‘ভীষণ দুঃখের। সীমান্তে দাঁড়িয়ে সেনা বাইরের শত্রুর সঙ্গে লড়ছে।

আর নিজেদের অধিকারের দাবি নিয়ে লড়ছে ভিতরে।’ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বেরোনোর পরই এদিন বিকালে তিনি হরিয়ানায় গ্রেওয়ালের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তবে তাকেও লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতালে (যেখানে ময়নাতদন্ত চলছে) যেতে বাধা দেওয়া হয়। দিল্লির ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার গুণ্ডামি করছে।’ উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলো এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি বড় অস্ত্র পেয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। বিষয়টি কেন্দ্রকে আরও অস্বস্তির মুখে ফেলে দিয়েছে, কারণ দুদিন আগেই হিমাচল প্রদেশে ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে দীপাবলি পালন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন, ‘এক পদ এক পেনশন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের জন্য প্রথম কিস্তির পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি এবারের দীপাবলি সেনা জওয়ানদের উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। জওয়ানদের বীরত্ব ও বলিদানের প্রশংসাও করেছেন তিনি। অথচ সেই দাবির দুদিনের মধ্যেই গ্রেওয়ালের আত্মহত্যার ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে সরকার। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে গ্রেওয়াল তার সতীর্থদের সঙ্গে দিল্লি এসেছিলেন। তার সতীর্থদের মতে, এক পদ এক পেনশন প্রকল্প চালু না হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন গ্রেওয়াল।

সর্বশেষ খবর