শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
সমাবেশ উত্তেজনায় দুই দল

‘নৈরাজ্য’ ঠেকাতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘নৈরাজ্য’ ঠেকাতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ

বিএনপি রাজধানীতে আগামী ৮ নভেম্বর সমাবেশের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তা প্রতিহত করবে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার জন্যই বিএনপি তথাকথিত ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করে। স্বাধীনতাকামী জনগণ এসব ‘বিপ্লব’ বিশ্বাস করে না। বিপ্লব হয় একটি আদর্শের ভিত্তিতেই। সেই আদর্শ নিয়ে তখন বিপ্লব হয়নি। কাজেই এখন ওই দিবসের আড়ালে দেশবিরোধী, বোমাবাজ, সন্ত্রাসীদের ঢাকায় জড়ো হতে দেওয়া হবে না। এদিকে বিএনপির ৮ নভেম্বরের জনসভার অনুমতির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনপত্রটি ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার দফতরে রয়েছে বলে জানা গেছে। ডিএমপির একটি সূত্র জানায়, হয়তো জনসভার আগের দিন কিছু শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হতে পারে। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নাকি অন্য কোনো স্থানে জনসভার অনুমতি দেওয়া হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপির অতীত রেকর্ড আমাদের জানা রয়েছে। তারা সমাবেশের আড়ালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদন থাকবে, তাদের অনুমতি দেওয়ার আগে সব ভেবে দেখতে হবে। তবে সমাবেশের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ্য করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন।’ আওয়ামী লীগ সূত্রমতে, বিএনপিকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের সুযোগ দিতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। তবে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে হবে তাদের। কিন্তু দেখা গেছে বিএনপির অধিকাংশ সমাবেশ কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। এর আগে রাজধানীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ করার নামে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়েছে। কাজেই অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই কড়া দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বিএনপির সমাবেশের দিকে। সমাবেশের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ্য করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও তা মোকাবেলার প্রস্তুতি রয়েছে আওয়ামী লীগের। এ জন্য ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ৭ নভেম্বর কিসের বিপ্লব, কিসের সংহতি দিবস? বিপ্লব হয় একটি আদর্শকে ধারণ করে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ কি ছিল? তার আদর্শ ছিল অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করা। ওই দিন একটি কালো অধ্যায় সৃষ্টি করা হয়েছিল। তিনি বলেন, সেই সময় এই সব যারা ঘটিয়েছিল, সেই জাসদও আজকে নেই, গণকণ্ঠ পত্রিকা, হককথা পত্রিকা আজ নেই। কাজেই এ দিবস পালনের সুযোগ নেই। তথাকথিত বিপ্লব দিবসের সমাবেশের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির  করার চেষ্টা করা হলে রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিপ্লব দিবসের নামে ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার জন্য মাঠে নামতে চায় একাত্তরের ঘাতকদের  দোসর বিএনপি। বিপ্লব দিবসের নামে হত্যাকারীদের মাঠে নামার কোনো সুযোগ নেই। এর নাম করে কোনো কর্মসূচি পালন করতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব সৈনিক তা প্রতিহত করবে।

সর্বশেষ খবর