মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেষ মুহূর্তে ই-মেইল কেলেঙ্কারিমুক্ত

প্রতিদিন ডেস্ক

নির্বাচনের ঠিক দুই দিন আগে বিশাল স্বস্তির বার্তাটি পেলেন হিলারি ক্লিনটন। ই-মেইল কেলেঙ্কারির তদন্ত করে কোনো দোষ খুঁজে পায়নি বলে ঘোষণা দিল মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। অথচ নির্বাচনের ১০ দিন আগে এফবিআইয়ের প্রধান জেমস কোমি হঠাৎ করে ঘোষণা দিয়ে বসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় হিলারি ব্যক্তিগত ই-মেইলে দেশের জন্য সংবেদনশীল তথ্যাদি ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি তদন্ত হওয়া দরকার। ওই ঘোষণার পরই হিলারির জনপ্রিয়তায় যথেষ্ট ধস নামে। বহুদিন ধরে চলা প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের যৌন নিপীড়নের অভিযোগগুলো চাপা পড়ে যায়। হতাশা নেমে আসে হিলারি শিবিরে। অবশেষে সেই অস্বস্তি থেকেই মুক্তি দিল এফবিআই। 

কংগ্রেসম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমি বলেছেন, ঘটনার পর্যালোচনা শেষ করেছে এফবিআই। তবে সেখানে এমন কিছুই পাওয়া যায়নি। এর আগেও একবার হিলারির ই-মেইল তদন্ত করেছিল সংস্থাটি। ওই তদন্তেও কোনো সমস্যা পায়নি এফবিআই। প্রথমবারের তদন্ত অর্থাৎ গত জুলাই মাসে কোমি বলেছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে সংবেদনশীল তথ্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ক্লিনটন অসাবধান ছিলেন, কিন্তু অপরাধী নন। রবিবারের প্রতিবেদনে কোমি বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সময়ে উচ্চমানের বিশাল কাজ শেষ করায় আমি এফবিআইয়ের পেশাজীবীদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’ এফবিআই প্রধানের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছের হিলারির নির্বাচনী প্রচারণার যোগাযোগ শাখার প্রধান ডেনিফার পালমিয়েরি। তিনি বলেন, কংগ্রেসম্যানের কাছে পাঠানো এফবিআই প্রধানের চিঠিটা আমরা দেখেছি। আমরা আনন্দিত যে, গত জুলাইয়ে তিনি  যে উপসংহারে পৌঁছেছিলেন সেটিই পেয়েছেন। আমরা অবশ্য আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে, তিনি এটাই পাবেন। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত, এই ব্যাপারটার একটা সমাধান হলো।

এফবিআইয়ের ওপর চটেছেন ট্রাম্প : হিলারি নির্দোষ খবরটা শুনেই এফবিআইয়ের ওপর চটেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে অনুচিত কাজের অভিযোগ এনেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প এক নির্বাচনী প্রচারণায় বলেন, ‘হিলারি দোষী। তিনি নিজেও তা জানেন। জানে এফবিআই, জানে জনগণ। এখন এ বিষয়ে বিচারের ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে হিলারির বিচার করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি এও বলেছেন, এখানেই শেষ নয়, হিলারির ই-মেইল তদন্ত চলতে থাকবে। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এর শেষ দেখে ছাড়বেন। আর ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির অভিযোগ করেছে, রাজনৈতিক চাপে পড়ে কোমি তড়িঘড়ি করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের উপদেষ্টা নেট গিংগ্রিচ এক টুইটে বলেন, ‘কোমি নিশ্চয়ই অনেক রাজনৈতিক চাপে ছিলেন।’

ফুরফুরে হিলারি শিবির : দ্বিতীয় দফায় ই-মেইল তদন্তে এফবিআই  কোনো দোষ খুঁজে না পাওয়ার খবরে নির্বাচনী প্রচারে শেষ মুহূর্তে স্বস্তি ফিরে এসেছে হিলারি শিবিরে। এত দিন যারা চুপসে গিয়েছিলেন এখন তারাই ফেসবুক, টুইটারসহ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিলারিকে আগাম অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তারা ধরেই নিয়েছেন হিলারি নিশ্চিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। অথচ মাত্র দুই দিন আগে জনমত জরিপে এগিয়ে থাকার পরও হিলারির সমর্থকরা জয়ের ব্যাপারে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারছিলেন না। অনেকে প্রকাশ করেছিলেন চরম হতাশা। এখন তারা সবাই খুশি। এফবিআইয়ের ঘোষণা আসার আগে রবিবার সর্বশেষ জনমত জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে ৪-৫ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন হিলারি। এএফপি, বিবিসি, সিএনএন।

সর্বশেষ খবর