শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীদের হতে হবে আদর্শবান দেশপ্রেমিক

---------ওমর ফারুক চৌধুরী

বাদল নূর

নেতা-কর্মীদের হতে হবে আদর্শবান দেশপ্রেমিক

আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, যুবলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে হতে হবে আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক। হতে হবে মানবিক, মেধা ও মনন মনস্ক, যুক্তিবাদী। তিনি বলেন, মানুষের প্রতি ভালোবাসাই ছিল জাতির পিতার সবচেয়ে বড় আদর্শ। সেই আদর্শ বিকশিত করেছেন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ দর্শনের মাধ্যমে। যুবলীগকে এই আদর্শ লালন ও ধারণ করতে হবে। যুবলীগের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল ধানমন্ডিতে যুব গবেষণা কেন্দ্রে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থাশীল যুবকদের নিয়েই এই যুবলীগ। নাগরিক অধিকার, ভোট ও ভাতের অধিকার, বাসস্থানের অধিকার, কথা বলার অধিকারসহ জনগণকে সমস্ত ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আনাই আমাদের লক্ষ্য। ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে জাগাতে হবে, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অবসান নিশ্চিত করতে হবে। এ সরকার বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে। আগুন সন্ত্রাসে হুকুমের আসামি খালেদা জিয়ার বিচার করতে হবে। এদেশে আইএস নেই। এই বিচার করলেই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল হবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, রাজনীতি হচ্ছে কঠিন ত্যাগ-তিতিক্ষার বিষয়। মানুষকে রাষ্ট্রচিন্তায় উদ্বুুদ্ধ করে তার মধ্যে প্রেরণা সৃষ্টির মন্ত্র মানব কল্যাণের আদর্শিক উপায়। আওয়ামী যুবলীগ তারুণ্যের দীপ্ত জয়গানের সংগঠন। যুব মেধা লালন, ধারণ এবং এর বিকাশই হলো যুবলীগের অন্যতম লক্ষ্য। যাতে আমরা মেধাভিত্তিক, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক যুব সমাজ গড়তে পারি। ওমর ফারুক চৌধুরী আরও বলেন, দেশের ঐতিহ্যবাহী যুব সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ। বিশ্বের মানচিত্রে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এবং রক্তাক্ত সংগ্রামের ভিতর দিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। সেই গৌরবময় সংগ্রামে অস্ত্র হাতে শত্রুর মোকাবিলা করেছিল এ দেশের অকুতোভয় যুব সমাজ। স্বাধীনতার পর জাতির পিতার নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণি এই যবুলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গত কয়েক বছরে সংগঠনের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায় যুবলীগের কর্মকাণ্ড বর্তমানে কেমন চলছে। আমরা ইতিহাস অন্বেষণ করেছি, গবেষণা করেছি, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা করেছি। যুবলীগকে আমরা অগ্রসরমান, পথিকৃৎ এবং যুব সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ গড়ার ডাকে এখন তরুণরা প্রবাস থেকে ফিরে আসছেন। কারণ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ এখন তরুণদের, যুবকদের দেশ।

উচ্চশিক্ষা শেষ করে কৃষিকাজে জড়িত হচ্ছেন তারা। আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন চিন্তা নিয়ে তরুণরা এগিয়ে আসছেন। মত্স্য খামার, ফলের বাগান, সবজি ও মসলা চাষের মতো উচ্চমূল্য কৃষিপণ্য উৎপাদনে এখন সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আসছেন তরুণ-যুবক উদ্যোক্তারা। তিনি বলেন, আর ক্ষমতার লড়াই নয়। রাজনীতির অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার আলোকে ভুলভ্রান্তি সংশোধন, আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে অব্যাহতভাবে জনসেবার নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, কোনো আন্দোলনকে  যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেমন সংগঠন অপরিহার্য, ঠিক তেমনি আন্দোলন না থাকলে সংগঠন বিনোদনমূলক ক্লাবে পরিণত হয়। অর্থাৎ প্রয়োজন হচ্ছে এই দুয়ের সমন্বয় সাধন। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হলে কর্মসূচি লাগবে। যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই (২৫ জুলাই ২০০৯) আমি সংগঠনটির আদর্শিক চেতনা এবং এর বিকাশের ব্যাপারে উদ্যোগী হই।

সেই লক্ষ্যে প্রথমে আমাদের রাজনীতির শিকড় অনুসন্ধানের কাজ করি। আর তারই অনুষঙ্গ হিসেবে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার চিন্তা, তার রাজনৈতিক কর্ম, তার দর্শন বিশ্লেষণের চেষ্টা করি। শেখ হাসিনার চিন্তাভাবনাগুলো ধারণের জন্য একটি পেশাদার গবেষক দল তৈরি করে বিশ্বে ৩৯টি রাষ্ট্র সফর করি। এই গবেষক দলটি দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে শেখ হাসিনার রাজনীতির ওপর গবেষণা করে। এ গবেষণার ফলাফল ছিল ঐতিহাসিক, তাত্পর্যপূর্ণ এবং অসাধারণ। এ গবেষণায় আমরা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাজনীতি বিশ্লেষণ করে দেখি যে, জাতির পিতার রাজনৈতিক আদর্শে বড় হলেও তিনি বিকশিত হয়েছেন তার আপন মহিমায় চারপাশের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে। যেখানে সব কিছু তাকে দ্রুত আয়ত্ত করতে হয়েছে সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে। তার রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় পাথেয় ও শক্তি হলো জনগণ। তিনি জনগণের হূদয়স্পন্দন শুনতে পান। আমরা শেখ হাসিনার দর্শনের নাম দিয়েছি ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’।

সর্বশেষ খবর