মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নোট বাতিল ইস্যুতে উত্তাপ বাড়ছে ভারতীয় রাজনীতিতে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

নোট বাতিল ইস্যুতে উত্তাপ বাড়ছে ভারতীয় রাজনীতিতে

দিন যত এগোচ্ছে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল নিয়ে ভারতের শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উত্তাপ বাড়ছে।

৮ নভেম্বর মধ্যরাতে নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে যারা সুর চড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে সবার প্রথমে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার অভিযোগ, নোট বাতিলের ফলে সাধারণ মানুষকে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। দেশকে বাঁচাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের হাত ধরতে রাজি আছেন বলেও জানান মমতা। তিনি জানান, ‘আমাদের সঙ্গে সিপিআইএমের আদর্শগত পার্থক্য থাকতে পারে। তবে দেশ বাঁচাতে সিপিআইএম, কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গেও কাজ করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ তিনি চান দেশজুড়ে বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে। আর সে লক্ষ্যেই অবিজেপি দলগুলো সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। ১৬ নভেম্বর মমতার পাশাপাশি কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আম আদপি পার্টি—আপপ্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সিপিআইএম সর্বভারতীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল—আরজেডিপ্রধান লালুপ্রসাদ যাদব, বহুজন সমাজ পার্টি—বিএসপিপ্রধান মায়াবতীও বিজেপি বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছেন। রাহুল তো আবার সাধারণ মানুষের নোট যন্ত্রণা শেয়ার করতে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে রুপিও বদল করেন। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা কপিল সিবাল জানান, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকারের আরও ভাবনাচিন্তা করার প্রয়োজন ছিল। এটা একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। মায়াবতীর অভিযোগ, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেন মনে হচ্ছে ভারতজুড়ে হরতাল চলছে। এর জন্য মোদি সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। বিরোধীদের এই লাগাতার আক্রমণের জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। সোমবার দুপুরে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে এক জনসভা থেকে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলোকে এক হাত নিয়েছেন তিনি। মোদি বলেন, তার এ সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ সাময়িক সমস্যায় পড়েছে ঠিকই কিন্তু গরিবরা শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। আর কালো রুপির কালোকারবারিরাই ঘুমের ওষুধ খাচ্ছে। গান্ধী পরিবারকেও নিশানা করেছেন মোদি। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নেহেরু প্রয়াত হয়েছেন, পরেও কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন কিন্তু দারিদ্র্য মেটাতে কোনো কাজই হয়নি। আমি নেহেরুর সেই অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দায়িত্ব নিয়েছি। দুর্নীতির শেষ দেখে ছাড়ব। লুকিয়ে রাখা কালো রুপি আমি খুঁজে বের করবই।’ মোদির মন্তব্যের পরই পাল্টা তোপ দাগেন মমতাও। মোদির ভাষণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টুইট করে তিনি বলেন, ‘মোদি বলছেন গরিবরা শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। এ মন্তব্য সাধারণ মানুষের পক্ষে অপমানজনক। এটা নিম্ন রুচির পরিচয়। এমন করে গরিবদের মারবেন না।’ এদিকে দেশ থেকে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এবার সংসদে ঝড় তুলতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী বুধবার দিল্লিতে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বসতে চলেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর