শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নোট বাতিল নিয়ে উত্তাল ভারতের সংসদ

প্রতিদিন ডেস্ক

রুপি বাতিলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিনেও অচল ভারতের সংসদ। এ অবস্থায় সোমবার পর্যন্ত লোকসভা মুলতবি হয়ে গেছে। দফায় দফায় মুলতবি হচ্ছে রাজ্যসভা। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবী আজাদের বৃহস্পতিবারের মন্তব্য নিয়ে গতকাল সংসদে তীব্র আক্রমণাত্মক হয় বিজেপি। রুপি সমস্যা দেশটিতে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে তার সঙ্গে জঙ্গি হামলার তুলনা করেন আজাদ। তার এই মন্তব্যের জন্য গতকাল বিজেপি দাবি করেছে আজাদকে ক্ষমা চাইতে হবে। পাল্টা আক্রমণে গুলাম নবী আজাদের দাবি, ক্ষমা চাইতে হবে সরকারকেই। লোকসভাতেও এ দিন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে তুমুল বিতণ্ডা হয়েছে মন্ত্রী অনন্ত কুমারের। বৃহস্পতিবার আজাদের মন্তব্যে রাজ্যসভা উত্তাল হয়ে ওঠে। পরে রাজ্যসভার কার্যবিবরণী থেকে আজাদের ভাষণের ওই অংশ বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই ইস্যুতে রাজ্যসভা গতকালও উত্তাল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি গতকাল বলেছেন, ‘গুলাম নবী আজাদের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য কংগ্রেসকে গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’ বিজেপির তরফে গুলাম নবী আজাদের এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলা হয় রাজ্যসভায়। কিন্তু সকাল থেকে পাল্টা আক্রমণাত্মক মেজাজে বিরোধী পক্ষ। গুলাম নবী আজাদ বলেছেন, ‘ক্ষমা আমরা চাইব না, ক্ষমা চাইতে হবে বিজেপিকে। দেশকে খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়ে দেওয়ার অপরাধে দেশের মানুষের কাছে বিজেপি ক্ষমা চাক।’ রুপি ইস্যুতে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের উত্তাপ গতকাল সকাল থেকেই রাজ্যসভা উত্তপ্ত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় প্রথমে বেলা ১১টা ৩০ পর্যন্ত রাজ্যসভা মুলতবি করে দেওয়া হয়। সাড়ে ১১টায় সভার কাজ শুরু হতেই ফের তুমুল অশান্তি শুরু হয় রাজ্যসভায়। ফলে বেলা ১২টা পর্যন্ত আবার মুলতবি করে দেওয়া হয় রাজ্যসভা। কিন্তু দুবার মুলতবি করেও রাজ্যসভার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি। তাই তৃতীয় বার তিনি রাজ্যসভার অধিবেশন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত মুলতবি করেন। লোকসভাতে পরিস্থিতিও গতকাল প্রথম থেকেই উত্তপ্ত। সকাল থেকেই গোটা বিরোধী পক্ষ সম্মিলিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় বিক্ষোভ শুরু করে। বিরোধী দল হট্টগোল করবে এটা আগে থেকেই জানত ক্ষমতাসীন দল। এ জন্য বিরোধী দলকে সায়েস্তা করতে বিজেপির পক্ষ থেকে দলের সব সাংসদকে লোকসভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীরা এতই আক্রমণাত্মক ছিলেন যে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পারেননি। কালো টাকা সংক্রান্ত আলোচনার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার এবং লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর স্পিকার সোমবার পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।

সর্বশেষ খবর