রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
আকবর আলি খান

দুই দলকে পর্দার আড়ালে আলোচনা করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই দলকে পর্দার আড়ালে আলোচনা করতে হবে

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে পর্দার অন্তরালে পরামর্শ করতে হবে। তাহলে একটা সমাধান আসবে। তিনি বলেন, এক দশকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে, প্রকাশ্যে আলোচনায় কোনো পক্ষই ছাড় দেবে বলে মনে হয় না। ড. আকবর আলি খান গতকাল এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শীর্ষক এক ছায়া সংসদে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজন আছে কিনা’ বিষয়ে বক্তৃতা করছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়। বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও সহযোগী অধ্যাপক রোকেয়া পারভীন জুঁই।

আকবর আলি খান বলেন, আমলাতন্ত্রের ওপর জনগণের আস্থা নেই। অথচ আমলারাই নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সহায়ক। এ কারণেই নির্বাচনকালীন দলীয় সরকারের পরিবর্তে বিশেষ সরকারব্যবস্থার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আরও দুবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে পারে। আবার সংবিধান সংশোধন করে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েও আগামী জাতীয় নির্বাচন দেওয়া যেতে পারে। তাই আশা একটাই, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করা উচিত। আমরা সেই সুদিনের অপেক্ষা করছি।’

ড. আকবর আলি খান আরও বলেন, কয়েক ধরনের নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারে যেমন— যে সরকার ক্ষমতায় ছিল সেই সরকারও থাকতে পারে, তবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর তার ক্ষমতা সীমিত থাকবে। সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া সর্বদলীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে; এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই। সে ক্ষেত্রে রুলস অব বিজনেস ও কিছু সমঝোতার ভিত্তিতে তা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সরকারের হাতে যত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছে পৃথিবীর ১০ ভাগ সরকারের হাতেও তা নেই। ভারত কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে সরকারপ্রধান ইচ্ছা করলেও নির্বাচনকালে কিছুই করতে পারে না। বাংলাদেশে একজন রিটার্নিং অফিসারও পাওয়া যাবে না যার কাছে ভারতের মতো দুই মাস ধরে ব্যালট বাক্স রাখা যাবে।

ড. আকবর আলি খান আরও বলেন, শুধু নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না; রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকা অথবা যাওয়ার লক্ষ্যে পরস্পরবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত। যে কারণে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ গণতন্ত্র ও সুশাসনের অভাব দেখা দিচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই ক্ষমতালিপ্সার ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর