রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাঁওতালদের ওপর হামলাকারীরা রাজাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাঁওতালদের ওপর হামলাকারীরা রাজাকার

অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত বলেছেন, সাঁওতালদের ওপর যারা হামলা করেছে, আগুন দিয়েছে তারা আলবদর, রাজাকার। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ‘সচেতন নাগরিকবৃন্দ’ এর আয়োজন করে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র নৃ-গোষ্ঠীর ওপর অত্যাচার করে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা যখনই ঘটে, সরকার চোখ বন্ধ করে থাকে। নৃ-গোষ্ঠীরা সৎ। এ জন্য তারা তীরের ডগায় বিশেষ কিছু ব্যবহার করেনি। ব্যবহার করলে যারা তীরবিদ্ধ হয়েছে, তারা সবাই মারা যেত। অথচ পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে তিনজনকে হত্যা করেছে। সেখানে সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমির মধ্যে সাড়ে চার হাজারই নৃ-গোষ্ঠীদের। সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। অর্থনৈতিক অঞ্চল করার শর্ত হচ্ছে তিন ফসলি জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে না। কিন্তু তাদের জমিগুলো সবই তিন ফসলি। অর্থনৈতিক অঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক থাকতে হবে। কিন্তু এসব জমির ৫০ কিলোমিটারের মধ্যেও তা নেই। নাব্যতাসহ নদী থাকতে হবে, সেটাও নেই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কলামিস্ট ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য। সংবাদ সম্মেলনে সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে— বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে তিনজন সাঁওতালের মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা; এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো; নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, পূর্ণ নিরাপত্তাসহ আবারও তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে বসবাসের পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়া; সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সার্বিক দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে; সব মিথ্যা মামলা অনতিবিলম্বে বাতিল করা ইত্যাদি। বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে তিনজন সাঁওতালের মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় আনতে হবে, সর্বোপরি আদিবাসীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। অনুষ্ঠানে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন মুরশিদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর