মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দেশ-বিদেশে জনমত গড়তে চায় বিএনপি

মাহমুদ আজহার

দেশ-বিদেশে জনমত গড়তে চায় বিএনপি

 

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনার ওপর জনমত তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকায় অবস্থান নেওয়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের হাতে বিএনপি প্রধানের ১৩ দফা প্রস্তাব সংবলিত ইংরেজি ভাষায় অনূদিত বইটি পৌঁছানো শুরু হয়েছে। দেশের বিশিষ্ট সমাজের প্রতিনিধির হাতেও নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির ভাবনা পাঠানো হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সর্বসাধারণের কাছে এ বার্তা পৌঁছে দিতে দলের নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন বেগম জিয়া। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, বিএনপি প্রধানের প্রস্তাবনার পক্ষে দেশে-বিদেশে ব্যাপক ক্যাম্পেইনে নামছে বিএনপি। দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সব স্টেকহোল্ডারদের কাছে নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি প্রধানের বার্তা পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য। দলটি মনে করছে, সংশ্লিষ্ট সব মহল ‘চাপ’ প্রয়োগ করলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে বাধ্য হবে সরকার। এরই মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটির পাশাপাশি বিএনপি চায়, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করুক। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা চাই, চেয়ারপারসনের প্রস্তাব সব মহলে আলোচনা হোক। পুরোটাই গ্রহণ করতে হবে, তা নয়। অন্যদেরও মতামত আসুক। সরকারি দলেও এ নিয়ে কথাবার্তা হোক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, কূটনৈতিক মহল, সুধীসমাজ—সর্বত্রই এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সব দলের কাছেই আমরা এ প্রস্তাব পাঠাব। সুন্দর একটি প্রস্তাবনার পক্ষে আমরা অবশ্যই জনমত তৈরি করব। জানা গেছে, কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদপূর্তি হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরপর  যে কমিশন দায়িত্ব  নেবে, তাদের অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই কমিশন কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে নিজের বক্তব?্য তুলে ধরতে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি চেয়ারপারসন। ইসি পুনর্গঠনে ১৩ দফা প্রস্তাব দেন তিনি। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তাত্ক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ প্রস্তাবকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আওয়ামী লীগ জোটের শরিক দলগুলোও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তবে সুধীসমাজের মধ্যে এ নিয়ে নানা ধরনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলছে। কূটনৈতিক মহলেও এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

এদিকে, শুক্রবার খালেদা জিয়া প্রস্তাবনা তুলে ধরার সময় ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের কাছে ওই প্রস্তাবনার ইংরেজি কপি হস্তান্তর করা হয়। এরপর ওই কপি পাঠানো হয় ঢাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসেও। খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনাকে কূটনীতিকরা ইতিবাচকভাবেই দেখছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চেয়ারপারসনের প্রস্তাবনা আমরা সব স্টেকহোল্ডারের কাছে পাঠাব। এরই মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এখানে শুধু সরকারই অংশীদারিত্ব নয়, সব রাজনৈতিক দল, সুধীসমাজ, কূটনৈতিক মহল সর্বোপরি তা দেশের জনগণের কাছেও তুলে ধরা হচ্ছে।’ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যেদিন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন, ওই অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তাদের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রস্তাবনা হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে বিভিন্ন দূতাবাসে প্রস্তাবনার কপি পাঠানো হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর