নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন। রবিবার শুনানি শুরু হয়। এর আগে ৯ অক্টোবর আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় চেম্বার আদালত। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দুদক নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করে। পরবর্তী বছরের ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। এরপর খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলা দায়ের কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না রুল জারি করে তা জানতে চায় আদালত। ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা জিয়া। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে গত বছর ১৮ জুন রায় দেয় হাইকোর্ট। খালেদার করা আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয় হাইকোর্টের সেই রায়ে। সেই সঙ্গে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশ অনুযায়ী বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন খালেদা জিয়া। পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া গত বছর ৭ ডিসেম্বর লিভ টু আপিল করেন। আবেদনে নিম্ন আদালতে চলমান এ মামলার কার্যক্রম স্থগিতেরও আর্জি জানানো হয়।

খালেদাসহ ৩৮ জনের অভিযোগ গঠনের শুনানি ১ ডিসেম্বর : রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা এ আদেশ দেন। এর আগে খালেদা জিয়ার অসুস্থতাজনিত কারণে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চান তার আইনজীবীরা। মামলার নথিসূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা করা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী। ওই ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করে পুলিশ। পরে একই বছরের ৩০ এপ্রিল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক বশির উদ্দিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিস্ফোরক আইনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।