বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশন গঠন সর্বসম্মত হওয়া উচিত

জিন্নাতুন নূর

নির্বাচন কমিশন গঠন সর্বসম্মত হওয়া উচিত

এম সাখাওয়াত হোসেন

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়টি অসম্ভব বলে মনে করছেন না সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তার মতে, সর্বসম্মতভাবে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হওয়া উচিত। তা না হলে সে নির্বাচন কমিশন প্রথমেই কাজ করতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেন। সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশন সর্বসম্মতভাবে গঠন হতে হবে। এ জন্য ন্যূনতম সম্মতি দরকার হবে। আর তা না হলে এটি রাজনৈতিক চাপের মধ্যে পড়বে। এ ছাড়া কমিশনের ওপর নীতিনির্ধারক ও জনগণের যদি বিশ্বাস না থাকে তবে অবিশ্বাস নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন কাজ করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে তার প্রতি মানুষের আস্থা। মানুষ যদি নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা-বিশ্বাস রাখতে না পারে তাহলে তারা রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপরও বিশ্বাস রাখতে পারবে না। এ কথাগুলো তাত্ত্বিক নয়, এগুলো আমরা ব্যবহারিকভাবেই আমাদের দেশে দেখতে পাচ্ছি এবং দেখেছি যে নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের বিশ্বাস না থাকলে কত কিছু ঘটে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে যে প্রস্তাব বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছ থেকে এসেছে তা রাজনৈতিক বলে আমি মনে করছি না। এটি একটি টেকনিক্যাল প্রস্তাব। জানি না কেন এটা নিয়ে শোরগোল তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়টি রাষ্ট্রপতি দেখবেন। কিন্তু আমাদের এখানে আইন নেই। আর যেহেতু আইন নেই সে জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়টি সর্বসম্মতভাবে দেখা উচিত। আর তা না হলে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে তারা এক ধরনের অস্বস্তিতে ভুগবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যতগুলো কনস্টিটিউশনাল বডি আছে শুধু জুডিশিয়ারি ছাড়া তার মধ্যে উঁচু স্তরের। আর নির্বাচন কমিশনে যে ব্যক্তি সার্চ কমিটির প্রধান হবেন তাকে চিফ ইলেকশন কমিশনের পদমর্যাদার ওপরে হতে হবে বলে আমি মনে করি। তবে ’৭২ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল এমন সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ছিল একটি ধারণাপত্র। আর এর সবই যে গ্রহণ করা হবে এমনটি নয়। সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, খালেদা জিয়া এ বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং টকশোগুলোতে আলোচনা হচ্ছে। আশা করছি এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে। মোটকথা, একটি নির্বাচন কমিশন সর্বসম্মতভাবে হওয়া উচিত। শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনার নয়, অন্যান্য কমিশনারের নিয়োগের ক্ষেত্রেও যারা প্রশাসন বোঝে, যারা অন্তত তাদের কাজকর্মে নিরপেক্ষ তাদের নিয়োগ দিতে হবে। তবে এত নিরপেক্ষ কাউকে তো আর পাওয়া যাবে না। কিন্তু যখন দায়িত্বপ্রাপ্তরা সেই চেয়ারটিতে বসবেন তখন তার কাজকর্মে যেন নিরপেক্ষতা প্রকাশ পায়। আগামী তিন মাসের মধ্যে নতুন কমিশন গঠন করা সম্ভব বলে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার মনে করেন। তিনি বলেন, এটি চাইলে একেবারেই সম্ভব আর না চাইলে মোটেও সম্ভব নয়। তবে সবকিছুতেই সরকারের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। বর্তমান সরকারও একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাইছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই চান সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

সর্বশেষ খবর