বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নীতি বদল করছেন ট্রাম্প

প্রতিদিন ডেস্ক

নীতি বদল করছেন ট্রাম্প

নির্বাচনী প্রচারের সময় জলবায়ুবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন তুলে নেওয়া, অভিবাসী বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ, মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত দেয়ালসহ নানা বিষয়ে কঠিন সব সিদ্ধান্তের কথা জোর গলায় বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু নির্বাচনে জেতার পর সেই ঘোষণা থেকে সরে আসছেন তিনি। এমন   কী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে এক চোখে ইসরায়েলকে দেখার কথা বললেও এখন বলছেন তার প্রেসিডেন্ট জীবনের অন্যতম সফলতা হবে যদি এই দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পারেন। এই শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে তিনি তার জামাতাকে শান্তির দূত হিসেবে নিয়োগ দেবেন। আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ভোটের আগে তার যেসব প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছিল, তার অনেকগুলোতেই অবস্থান বদলের ইঙ্গিত মিলেছে ইতিমধ্যে।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি তার প্রথম ১০০ দিনের কর্মসূচির একটি ধারণা দিয়েছেন। সেখানেই তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় যেসব কঠোর নীতির কথা বলেছিলেন তা থেকে সরে আসার আভাস দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে জলবায়ু বিষয়ে বলেছেন, প্যারিসসহ আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বিষয়ে তিনি ‘খোলা মন’ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। রয়টার্স লিখেছে, ভোটের প্রচারে ট্রাম্প বারবারই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাতিলের কথা বলে এলেও তার নতুন অবস্থান আগের চেয়ে ‘নরম’। জলবায়ু পরিবর্তনকে যিনি ‘ধাপ্পাবাজি’ বলেছিলেন, সেই ট্রাম্পই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মানুষের কার্যকলাপের সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ‘কিছু সম্পর্ক’ আছে বলে তিনি মনে করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম এক মাসে কী কী করবেন, তার একটি রূপরেখা ভোটের আগে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, জাতিসংঘের জলবায়ু তহবিলে যুক্তরাষ্ট্রের যে অর্থ দেওয়ার কথা, সেই অর্থ ট্রাম্প ব?্যয় করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের অবকাঠামো সংস্কারে। এর মধ?্য দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে তার। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনা; বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা প্রাণি ও উদ্ভিদ রক্ষা; খরা, বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধে ২০১৫ সালে হওয়া প?্যারিস চুক্তিতে ২০০টির মতো দেশ অনুসমর্থন দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন প্রত?্যাহার করে নিলে প?্যারিস উদে?্যাগ মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সর্বশেষ মরক্কোর মারাকাশে জলবায়ু সম্মেলন হয়েছে। সেখানেও সম্মেলনের সফলতা যুক্তরাষ্ট্রের ভাবি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর বর্তাবে বলে আভাস দেওয়া হয়।

হিলারিকে জেলে ঢোকানোর ইচ্ছা নেই : ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে জেলে ঢোকানোর প্রতিশ্রুতি থেকে সরে দাঁড়ালেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের কোনো ইচ্ছা তার নেই। ই-মেইল ইস্যুতে হিলারির বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্তও শুরু করা হবে না। ক্লিনটন পরিবারকে বিপাকে ফেলার ইচ্ছা নেই তার। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বারবার বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ক্লিনটন পরিবারের ফাউন্ডেশনের অর্থ নিয়ে তদন্ত করবেন। এখন বলছেন, তিনি তা করবেন না। নির্বাচনী প্রচারে হিলারিকে ‘কুটিল হিলারি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।

তালিকায় আপাতত অভিবাসী বিতাড়ন নেই : সোমবার রাতে আড়াই মিনিটের এক ভিডিও বার্তায় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম যে ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, তাতে তিনি যে পাঁচটি বিষয় তালিকাভুক্ত করেছেন তাতে প্রথমে রয়েছে আন্তপ্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতা চুক্তি বা টিটিপি বাতিল। কিন্তু তাতে মেক্সিকোর সঙ্গে দেয়াল তোলা অথবা ১ কোটি ৩০ লাখ অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কারের কোনো কথা নেই।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করা : ট্রাম্প বলেছেন মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি নির্ভর করছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি করা। এ জন্য আমার অন্যতম প্রধান কাজ হবে এই দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে এজন্য আমি মধ্যপ্রাচ্যের দূত হিসেবে আমার জামাতাকে নিয়োগ দেব। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর