মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আশরাফের বাসায় গেলেন কাদের

সংবর্ধনা দিলেন শ্রিংলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আশরাফের বাসায় গেলেন কাদের

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গতকাল দুপুরে ওবায়দুল কাদের দলের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে নিয়ে সৈয়দ আশরাফের বেইলি রোডের বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় দলীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন। সাক্ষাৎকালে সৈয়দ আশরাফের অসুস্থ স্ত্রীর খোঁজখবর নেন ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া তিনি দলের নানা কর্মসূচির বিষয়ে তাকে অবহিত করেন। দীর্ঘ ৩০ মিনিটের হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠক শেষে সৈয়দ আশরাফ উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করেন। দলের কাউন্সিলের পর পুরনো ও নতুন সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। এ প্রসঙ্গে আফজাল হোসেন বলেন, আলোচনায় ওবায়দুল কাদের দলের নানা বিষয়ে সৈয়দ আশরাফকে অবহিত করেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে তার আগের মতো উপস্থিতি কামনা করেন। সৈয়দ আশরাফ দলের কাজে সার্বিক সহযোগিতা আগের মতোই করে যাবেন বলে উল্লেখ করেন। অসীম কুমার উকিল এবং আফজাল হোসেন জানান, ওবায়দুল কাদের সাক্ষাৎ করতে গেলে তাকে ‘আমার নেতা’ বলে সম্বোধন করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি যখন ছাত্রলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম, তখন আপনি (ওবায়দুল কাদের) দফতর সম্পাদক ছিলেন। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সবাই রাজনৈতিক সহকর্মী। আমরা একত্রে কাজ করতে চাই। দীর্ঘ সাত বছর আপনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কোনো পরামর্শ থাকলে আমাকে জানাবেন। তিনি সৈয়দ আশরাফকে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, হ্যাঁ যাব। গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। এর আগে সাত বছর এ দায়িত্বে ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এ ছাড়া তিনি ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের হাল ধরতে এগিয়ে আসেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর গত ২৯ অক্টোবর ১৫ দিনের ছুটিতে লন্ডনে যান সৈয়দ আশরাফ। গত ১৩ নভেম্বর ছুটি শেষ হলে তিনি আরও ১৫ দিনের ছুটি বাড়িয়ে নেন। গত ২৭ নভেম্বর তিনি দেশে ফিরেন।

ভারতীয় হাই কমিশনারের সংবর্ধনা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সংবর্ধনা জানিয়েছেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গত রাতে রাজধানীর গুলশানে হাইকমিশনারের বাসভবনে এ সংবর্ধনা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট নাগরিকরা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের বন্ধন অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ওটুট থাকবে। অনুষ্ঠানে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলায় বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দুই দেশের সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা জনগণকে ভালোবাসতে জানেন না, তাদের আওয়ামী লীগে দরকার নেই। দল করলে নিয়ম মেনে করতে হবে। দু-চারজনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জন ম্লান হতে দেব না। রাজধানীর নগরভবনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের দশম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, বক্তৃতার মধ্য দিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের প্রসংশা করে তাদের খুশি করার প্রয়োজন নেই। জনগণকে খুশি করুন। তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করুন।

নির্বাচনের আর মাত্র দুই বছর আছে। এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। ঘরে ঘরে যান। আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করুন।

তিনি মোহাম্মদ হানিফকে স্মরণ করে বলেন, তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শচ্যুত হননি। তার কাছ থেকে শিখেছি কীভাবে জনগণকে ভালোবাসতে হয়। কীভাবে দলকে শক্তিশালী করতে হয়। শিখেছি কীভাবে জনসমর্থন পেতে হয়। তার মতো নেতা কম দেখেছি। মৃত্যুর পরেও তিনি মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র আলহাজ মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে এ সভায় বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বেলাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।

মেয়র আনিসুল হক বলেন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ঢাকাবাসীসহ সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তিনি সহজে মানুষের মন জয় করে নিতে পারতেন। মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ঢাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, আজ আমি মেয়র হয়েছি। মন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছি। বাবা আমার এই অবস্থান দেখে যেতে পারেননি। আমার মধ্যে সব সময় শূন্যতা বিরাজ করে। বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছি। তিনি সারাটা জীবন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকাবাসীর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন। আপনারা আমার বাবাকে অনেক ভালোবাসতেন। আজ বাবা নেই, তার সন্তান হিসেবে আপনাদের কাছে বাবার স্নেহ-ভালোবাসা চাই। আমিও যেন বাবার মতো আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে পারি।

সর্বশেষ খবর