শিরোনাম
বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অর্থ দেবে না রিজাল ব্যাংক

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি, রিজাল ব্যাংক) কোনো ক্ষতিপূরণ দেবে না বলে জানিয়েছে। রিজাল ব্যাংকের পক্ষ থেকে রিজার্ভ চুরির জন্য বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে। গতকাল ব্যাংকটির আইনজীবী এ কথা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।

রিজাল ব্যাংকের আইনজীবী থিয়া দায়েপ রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িতদের সামনে আনতে স্বচ্ছভাবে তদন্ত ও প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্ততটুকু করতে পারে। থিয়া দায়েপ বলেন, ‘চুরির ঘটনার জন্য আরসিবিসি দায়ী নয়। আমাদের বিরুদ্ধে তাদের কোনো মামলাও নেই। বিবির (বাংলাদেশ ব্যাংক) অবহেলাই এর জন্য দায়ী।’ ফিলিপাইনের দৈনিক পত্রিকাগুলোয় খবর প্রকাশিত হয়, ম্যানিলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরসিবিসি ব্যাংকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে। এ খবরের পরিপ্রেক্ষিতে রিজাল ব্যাংকের আইনজীবী এক বিবৃতিতে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার বিষয়টি জানালেন। দায়েপ জানান, চুরির তিনটি ধাপ পার হয়ে অর্থ তাদের ব্যাংকে আসে। এ ছাড়া রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জড়িত থাকার খবরের বিষয়টিও সামনে আনেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা রয়টার্সকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিউইয়র্ক ফেডের পক্ষ রিজাল ব্যাংকে অর্থ আটকে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু রিজাল ব্যাংক তাতে সাড়া দেয়নি। তা ছাড়া নগদে এ অর্থ উত্তোলনও ছিল অস্বাভাবিক। অর্থ স্থানান্তরের প্রক্রিয়াও স্বচ্ছ। তাই পুরো ব্যাপারটাই প্রশ্নবিদ্ধ।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ওই দেশের রিজাল কমার্স ব্যাংকের পাঁচজন গ্রাহকের হিসাবে স্থানান্তর হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক ও ওয়েলস্ ফারগো— এ তিন ব্যাংকের মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। এ অর্থ গত বছরের মে মাসে খোলা পাঁচটি হিসাবে জমা করা হয়েছে। এ হিসাবগুলো ওই মাসেই ভুয়া তথ্য দিয়ে খোলা হয়েছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সার্ভার হ্যাক করে ৬ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা (৮৭০ মিলিয়ন ডলার) ফিলিপাইনের রিজাল কমার্স ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করে ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ ছাড় না করার নির্দেশ দেওয়ায় বিপুল অর্থ চুরির হাত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রক্ষা পায়।

এদিকে রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সংসদ ভবনে গতকাল সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কমিটির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিল। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি শওকত আলী জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর কাছে রয়েছে, তিনি প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। বৈঠক শেষে শওকত আলী বলেন, ‘কমিটি ফরাসউদ্দিন সাহেবের প্রতিবেদন চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা দাখিল করতে পারেনি। অর্থমন্ত্রী দায়িত্বশীল ব্যক্তি। কিন্তু সংসদ এবং সংসদীয় কমিটিকে তো এটা (প্রতিবেদন) দেখাতে হবে।’

 পরবর্তী বৈঠকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বৈঠকে কমিটির সদস্য  মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, আবদুর রউফ ও নাভানা আক্তার অংশ নেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর